ঘেরের পানিতে চিংড়ি মাছ। জমির আইলে পেঁপে-পেয়ারা। রয়েছে ঝুলন্ত শীতকালীন সবজি ও ধানের আবাদ। জমির বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে খুলনা ও বাগেরহাটের বিল এলাকায় শুরু হয়েছে একই সঙ্গে চার ফসলের চাষাবাদ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়ভাবে এটি ‘চারতলা কৃষি’ নামে পরিচিত। একই জমিতে উত্পন্ন ফল, মাছ, ধান ও সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। জানা যায়, খুলনার রূপসা, ডুমুরিয়া, তেরখাদা ও ফুলতলা উপজেলার বিল এলাকায় একসময় শুধু ধান ও মাছের চাষ হতো। এখন ঘেরের আইলে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সমন্বিত পদ্ধতিতে ফল ও সবজির চাষ হয়। ফলে চারতলা কৃষিতে বেকারত্ব মোচনের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে। সরেজমিনে খুলনার বিল পাবলা, বাস্তুহারা, জাবুসা ও ডাকাতিয়া বিলের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যতদূর চোখ যায় সবুজের হাতছানি। ঘেরের আইলে সারি সারি মাঁচায় ঝুলছে করলা, ঢেঁড়স, পুঁইশাক ও কুমড়োর বাড়ন্ত ফসল। বিশেষ জাতের লম্বাটে শিম ও কুমড়োর হলুদ ফুলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ফল আসতে শুরু করেছে ঘেরের জমিতে লাগানো কলা, পেঁপে ও পেয়ারা গাছে। ঘেরের আইলে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষ শুরু করেছেন অনেকে। এতে ফুল ও ফলের পরাগায়নের সঙ্গে উত্পাদিত মধু বিক্রি করে বাড়তি আয় হচ্ছে। প্রায় একই চিত্র খুলনার রূপসা, ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার ঘুপিয়ার বিল, জাবুসা, আড়ংঘাটা ও খাজুরা বিলের। ‘স্বল্প জমি ও কম পুঁজিতে অনেক লাভ’—উত্সাহিত হয়ে চারতলা কৃষিতে ঝুঁকছেন অনেকেই। খুলনা মহানগরীর পার্শ্ববর্তী বাস্তুহারা বিলের কৃষক মো. আলী জানান, চিংড়িতে এবার আমাদের লস (ক্ষতি) গেছে। লোকসানের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে কষ্টে আছি। কিন্তু চারতলা কৃষিতে উত্পন্ন ফল ও সবজি বিক্রি করে আমরা মাছের লোকসান কাটিয়ে উঠেছি। কৃষকরা জানিয়েছেন, পৌষ-মাঘ মাসে ঘেরের পানি শুকিয়ে গেলে ক্যানেল করে সেখানে চিংড়ি ও সাদা মাছের চাষ হয়। আর ঘেরের অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে তখন বোরো ধান রোপণ করা হয়। এখন থেকেই শুরু হয়েছে বীজতলা তৈরির কাজ। স্বল্প সময়ে ফল পেতে কলা, পেঁপে ও পেয়ারার আবাদ করা হচ্ছে। আগে জমিতে একটি ফসল হতো। এখন সেখানে চারটি ফসল হচ্ছে। খুলনা মেট্রোপলিটন উপসহকারী কৃষি অফিসার এস এম আনিছুর রহমান জানান, জমির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে চিংড়ির সঙ্গে ঘেরের আইলে ও ঢালে শীতকালীন সবজি চাষ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিকল্পনামাফিক ফল ও ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। এদিকে নতুন পদ্ধতির এই চাষাবাদে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে অপার সম্ভাবনার কথা জানালেন খুলনা মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, একই জমিতে কৃষক চার ফসল পাওয়ায় ফসলের নিবিড়তা বাড়ছে। সেই সঙ্গে কোনো জায়গা পতিত থাকছে না। উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় এখানকার কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আর তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন চারতলা কৃষিতে।
শিরোনাম
- ছিটকে গেলেন মহারাজ, প্রোটিয়াদের নেতৃত্বে মুল্ডার
- কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ
- মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা
- নতুন গানে কন্ঠ দিলেন সাবিনা ইয়াসমিন
- ওয়াটারলু উৎসবে বাংলাদেশের ‘আনটাং’
- অবশেষে পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার
- নারী ফুটবল দলকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
- বয়সের বাধা পেরিয়ে ধর্মীয় জ্ঞান আহরণ
- সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেফতার
- ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা ‘রোলার কোস্টার যাত্রা’: প্রিন্সেস কেট
- শ্রীলঙ্কার কাছে হারল বাংলাদেশ
- মার্কিন সিনেটে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস
- ‘হলি আর্টিজান নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য খণ্ডিতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে’
- জাতীয় ঐকমত্য গঠনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে বিএনপি : সালাহউদ্দিন
- আগামী ৫ দিনে দেশজুড়ে বৃষ্টির আভাস
- জাপানে দুই সপ্তাহে ৯১১ ভূমিকম্প
- জনতার ভয়ে ডোবায় কেশবপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি
- বিশেষ অভিযানে আরও ১৩০৫ জন গ্রেফতার
- ইতিহাস গড়ে প্রথমবার এশিয়ান কাপে বাংলাদেশ
- সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের জন্য সংসদের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন : আমীর খসরু
কৃষি সংবাদ
একই সঙ্গে চার ফসল
সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর