শনিবার, ২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের লড়াইয়ে রাজশাহী বরিশাল

পুরোদমে প্রচারণায় লিটন দোদুল্যমান বুলবুল

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

পুরোদমে প্রচারণায় লিটন দোদুল্যমান বুলবুল

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে নগর সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। বর্তমান মেয়র নগর বিএনপি সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন। ফলে তাঁর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে তিনি অনেকটাই দোদুল্যমান। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক বৈঠক থেকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মেয়র প্রার্থী হিসেবে লিটনকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। লিটন জানান, দলীয় প্রধান তাকে প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামতে বলেছেন। সে হিসেবে তিনি মাঠের কাজ শুরু করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেন, দলের কর্মীরা তাদের অতীতের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ফলে আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবেই সবাই তার পক্ষে মাঠে নামবেন। ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে তার শীতল সম্পর্কের বিষয়টিও একটি পক্ষের প্রচারণা বলে জানান তিনি।

সরেজমিন দেখা গেছে, পুরো নগরী লিটনের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। গত তিন দিনে কয়েক লাখ রঙিন পোস্টার লাগানো হয়েছে। নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জানান, তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। তাদের প্রার্থী যেহেতু নিশ্চিত, ফলে তারা আরও জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছেন। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখনো দোদুল্যমান বর্তমান মেয়র নগর বিএনপি সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু জানিয়েছেন তাদের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী যেভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাতে ভোটাররা আগামীতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে। তাকে পোস্টার-ব্যানার টানাতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে সাবেক মেয়রের ব্যানার-পোস্টার টানানো হচ্ছে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারছি না। ভোটাররা তাহলে কীভাবে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন? এমন অবস্থা চললে নির্বাচনে অংশ নেব কিনা ভাবতে হবে। যদি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে নির্বাচনে অংশ না-ও নিতে পারি।’ প্রায় দুই বছর নগর ভবনের বাইরে থাকা নির্বাচিত মেয়র বুলবুল মাত্র ২৬ মাস দায়িত্ব পালন করতে পেরেছেন। ফলে নগরীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তার অংশগ্রহণ কম ছিল। তবে মিনুকে সরিয়ে দলের সভাপতি হওয়ার পর থেকে অনেকটা বেকায়দায় আছেন তিনি। মিনু সমর্থকরা বুলবুলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগও করেছেন একাধিক সিনিয়র নেতা। এ ছাড়া মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার পর কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে পড়েন তিনি। কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি না হওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে জনতার মুখোমুখি হতে পারেন বুলবুল।

নগর বিএনপি সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল জানান, নির্বাচিত হওয়ার পরও তাকে যে কাজ করতে দেওয়া হয়নি তা নগরীর মানুষ জানেন। এ ছাড়া দলের ভিতরে আগে তার বিরুদ্ধে কিছু নেতা ছিলেন। কিন্তু এখন বিএনপির সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ। আগামী নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর মাঠে তা দেখা যাবে। মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর