রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হেফাজত কেন্দ্রের জানালা ভেঙে পালাল ১৭ কিশোরী

গাজীপুর প্রতিনিধি

বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ১৭ কিশোরী গাজীপুর হেফাজত কেন্দ্রের জানালা ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার পর ১২ জনকে ফের আটক করেছে পুলিশ।

গাজীপুরের মোগড়খাল এলাকার ‘নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র’ নামের হেফাজত কেন্দ্র থেকে শুক্রবার রাতে তারা পালায়। কেন্দ্রের সুপার জোবাইদা খাতুন বলেন, কিশোর অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ১৮ বছরের কম বয়সী কিশোরীদের এখানে রাখা হয়। বর্তমানে তাদের হেফাজতে আছে ৩৪ কিশোরী।

‘তাদের মধ্যে ১৭ জন শুক্রবার রাতে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর রাতেই গাজীপুর ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে ১২ জনকে ফের আটক করা হয়েছে।’ তারা কিভাবে পালাল সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের দ্বিতীয়তলায় ২০৫ নম্বর কক্ষের কয়েকজন বন্দী লোহার খাটের পায়া দিয়ে জানালার গ্রিল ভেঙে ফেলে। তারা বিছানার চাদর ও ওড়না বেঁধে বেয়ে নিচে নেমে বিচ্ছিন্নভাবে পালিয়ে যায়। রাত ১২টার দিকে পরিদর্শনে গেলে ঘটনা ধরা পড়ে।’ জয়দেবপুর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে কেন্দ্রের পেছনের রাস্তা থেকে একজন ও বাসন সড়ক থেকে তিনজনকে ফের আটক করে বলে তিনি জানান। এছাড়া অন্য ৮জনকে আটক করা হয় টাঙ্গাইল থেকে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, ‘সেফ হোম থেকে পালিয়ে তারা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর রেলস্টেশনে যায়। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গগামী একটি ট্রেনে ওঠে। ট্রেনে তারেক সালমান নামে এক হোটেল কর্মচারীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। ‘শনিবার মির্জাপুর রেলস্টেশনের কাছে তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন রোহিঙ্গা ভেবে ৮ কিশোরী ও তারেককে আটক করে পুলিশে দেয়।’ তাদের পালানোর খবর জানতে পেরে আশ্রয় কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় বলে তিনি জানান।

এমন ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।

তিনি বলেন, পলাতক অন্য ৫ জনকে আটকের চেষ্টা চলছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, গাজীপুর জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসন থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, অন্য দুই সদস্য হলেন তোফাজ্জল হোসেন ও শাহানাজ আক্তার। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক শাহনাজ দিলরুবা জানান, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফরিদা ইয়াছমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর