শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নতুন রূপে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল

উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, নভেম্বর থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন রূপে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল গতকাল উদ্বোধন শেষে ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী —বাসস

পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার পর তিনি হোটেলটি উদ্বোধন করে এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল এবং পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান। দীর্ঘ প্রায় চার বছর সংস্কার কাজ চলার পর গতকাল হোটেলটি উদ্বোধন হলো। নভেম্বরের প্রথম তিনি এসব কথা বলেন। এই হোটেল উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের পাঁচ তারকা হোটেলের সারিতে যুক্ত হলো রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত আরও একটি অভিজাত হোটেল। সম্পূর্ণ গ্রীন হোটেল হিসেবে এবং সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এই হোটেলটি বিশ্ব গ্রাহকদের কাছে নতুন এক চমক সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাজাহান কামাল, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মুহম্মদ ফারুক খান, ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপের রিজিওনাল ডিরেক্টর ডেভিড টড, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন এই হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যে বিদেশি সাংবাদিকরা ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অ্যাকশনে যাওয়ার আগে তাদের হোটেলে আটক করে ফেলে। আর বের হতে দেয়নি। সায়মন ড্রিং তখন অল্প বয়সী ছিলেন এবং লুকিয়ে হোটেলের কিচেন দিয়ে কর্মচারীদের সহযোগিতায় বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনিই ছিলের প্রথম সাংবাদিক যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ শুরু করেছিল, ঢাকার রাজপথে যে শুধু লাশ পড়ে ছিল, সেই ছবি তুলে বার্তাটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। কাজেই এই হোটেলের সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িত। সেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল, পরে শেরাটন এবং সেখান থেকে রূপসী বাংলা নাম ধারণ করে ৪ বছরের সংস্কার ও আধুনিকায়নের পর আজ আবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ভবনের মূল কাঠামো ঠিক রেখে যুক্ত করা হয়েছে স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মোগল স্থাপত্যশৈলী। সঙ্গে আধুনিক সময়ের চাহিদা মেটাতে আনা হয়েছে অবকাঠামোগত পরিবর্তন। আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী ইন্টারকন্টিনেন্টালে যে ধরনের সেবা ও সুবিধা পাওয়ার কথা, এই হোটেলটিকেও সেভাবে অতিথিদের জন্য নতুন রূপে গড়ে তোলা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নের ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী, পর্যটক এবং দর্শনার্থীদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় আমাদের আরও নতুন নতুন উন্নতমানের ও আধুনিক হোটেল দরকার। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, এমপিবৃন্দ, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশি কূটনৈতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

২০১৪ সালে হোটেলটির সংস্কার কাজের শুরু হয়। ব্রিটিশ গ্লোবাল হোটেল চেইন ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপ (আইএইচজি) এবং বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল) মধ্যে এ নিয়ে একটি ৩০ বছরের চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী হোটেলটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে  দেখেন।

সর্বশেষ খবর