শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

ঠাকুরগাঁওয়ে মদনটাক পাখির ১৮ বছর

আবদুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে মদনটাক পাখির ১৮ বছর

বিরল প্রজাতির মদনটাক পাখিগুলো ১৮ বছর ধরে সংসার করছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সিংহারি গ্রামে। গ্রামবাসীর মমতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে পাখিগুলো। বংশ বিস্তার আর খাবারের সন্ধানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পাখিগুলোর ছোটাছুটিতে মুখরিত গ্রামটি। তবে নিরাপদ আশ্রয় ও পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে দিন দিন কমছে দুর্লভ এই পাখিগুলো- এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা হরিপুর উপজেলার সিংহারি গ্রাম। চারদিকে কোলাহল আর মানুষের বসবাস। পুকুরপাড়ের বাঁশঝাড় আর বড় একটি শিমুল গাছে হারিয়ে যাওয়া বিরল পাখি মদনটাকের বাস। ২০০০ সালে ছয়টি মদনটাক পাখি আসে এই গ্রামে। সে বছর ঝড়-বৃষ্টিতে দুর্ভোগে কয়েকটি বাচ্চা নিয়ে চলে যায় পাখিগুলো। পরের বছর প্রজননের সময় আবার আসে ১০টি মদনটাক। সে বারও বাচ্চা ফুটিয়ে চারটি ছানা নিয়ে চলে যায়। এবার এসেছে ছয় জোড়া পাখি। ডিম পেরে ছানা ফুটিয়েছে চারটি। সংসারে নতুন অতিথিদের পাহারায় সার্বক্ষণিক থাকছে দুটি মা-পাখি। অন্যরা এদিক সেদিক ঘুরে আনছে খাবার। সকাল-সন্ধ্যায় পাখিগুলোর কলরব আর নীড়ে ফিরে আসা যেন এক অপরূপ দৃশ্য। মদনটাক দেখতে আসছে অনেকে। আর এই গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধদের চোখে চোখে থাকছে পাখিগুলো। শিকারিদের প্রতিরোধ করছে তারা। এলাকাবাসী জানায়, ২০১৬ সালে এই গ্রামে সর্বোচ্চ আসে ৩০টি পাখি। সেবারও শিলাবৃষ্টিতে পাখিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। এরপর থেকে কমছে প্রকৃতি ও পরিবেশের বন্ধু এই পাখিগুলো। যেন ১৮ বছরের মায়া-মমতার বন্ধনে আবদ্ধ পাখি ও গ্রামবাসী। মদনটাক পাখিগুলোর বিচরণে ওই গ্রামের শোভাবর্ধন করছে। খেত-খামারের ক্ষতিকর পোকা-মাকড়, ইঁদুর খেয়ে উপকার করছে কৃষকের। তাই পাখিগুলো রক্ষা ও অভয়াশ্রম তৈরি করতে প্রশাসনেরও প্রচেষ্টার যেন কমতি নেই। নজরদারিতে রাখছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাও। পশুপাখি রক্ষা করে ফিরিয়ে আনা হোক সুষ্ঠু-নিরাপদ পরিবেশ।

জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় পাখিগুলো ভূমিকা রাখবে। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে অনেকে এমন প্রত্যাশা পরিবেশবিদদের।

সর্বশেষ খবর