লক্ষ্মীপুরে দখল আর দূষণে অবরুদ্ধ হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে একসময়ের প্রমত্তা ডাকাতিয়া নদী। নদীর বুকে ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বাঁধ দিয়ে অবৈধ মাছ চাষ, ময়লা-আবর্জনায় পানিদূষণের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানির প্রবাহ অবরুদ্ধ হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে সব নৌ-চলাচল। এতে করে এখান থেকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মালামাল পরিবহন হচ্ছে না। ফলে সুবিধা-বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী দখলবাজদের তালিকা দিতে না পারলেও উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছেন বলে জানান। জানা যায়, ডাকাতিয়া নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে, কুমিল্লা-লাকসাম-চাঁদপুর হয়ে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌর শহরের ওপর দিয়ে হাজিমারায় মেঘনা নদীতে মিশেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দখলে-দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে নদীটি। স্বাধীনতার পরও রায়পুর-হায়দারগঞ্জ সড়কে নদীর ওপর ছিল একটি কাঠের সেতু। কিন্তু এখন রাস্তার দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই যে এখানে একটা নদী ছিল। কারণ সেতুর দুই পাশে ইজারা নেওয়ার নামে বড় বড় স্থাপনা ও দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। উত্তর পাশেই ছিল রায়পুর বাজার লঞ্চঘাট, যেখানে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে লঞ্চ ও বড় বড় নৌকা আসা-যাওয়া করত। এ নদী দিয়ে বরিশাল, ভোলা, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মালামাল পরিবহন করা হতো বলে স্থানীয়রা জানান। নদীর ওপর রাস্তা ও ভূমিদস্যুদের স্থাপনা নির্মাণের কারণে স্বাভাবিক গতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় এখন বন্ধ হয়ে গেছে সব নৌ-চলাচল। একইভাবে রায়পুর মহিলা কলেজের সামনে নদী ভরাট করে অপরিকল্পিতভাবে একাধিক কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এর আশপাশের ৮-১০টি স্থানে বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। একই সঙ্গে সুপারি ভেজানোসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে গেছে বেশ কয়েক মাস ধরে। রায়পুর পৌর শহর থেকে ও সোলাখালী ব্রিজ এলাকাসহ প্রায় ১৬ কিলোমিটার জুড়ে এমনই চিত্র নদীটির। ফলে নদীর পানি ব্যবহার, মাছ ধরা ও নদীপথে চলাচল করতে পারছেন না এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষক, বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, নদীটি খনন করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে দেওয়া ও দখল উচ্ছেদ করে প্রতিবন্ধকতা দূর করা। তাহলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নদীকেন্দ্রিক লাখো মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুসা দখলবাজদের কোনো তালিকা দিতে না পারলেও নদীটি খনন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান। তিনি বলেন, দখল উচ্ছেদের বিষয়ে সরকারি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দখল উচ্ছেদের কাজ শুরু হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে নদী এলাকার কোনো সম্পত্তি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি জানিয়ে যারা মাছ চাষ করছেন তারা অবৈধ বলে মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা। রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় জানান, নদী দখলমুক্ত করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। নতুন করে কেউ দখল করতে চাইলে তা করতে দেওয়া হবে না।
শিরোনাম
- বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত?
- সিরাজগঞ্জে অটোচালক হত্যার রহস্য উদঘাটন, তিনজন গ্রেফতার
- শাবিপ্রবি ছাত্রদল সভাপতির উদ্যোগে মুক্ত দুই ছাত্র ইউনিয়ন নেতা
- আশুলিয়ায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৬ ইটভাটা
- নাফ নদে ৬ রোহিঙ্গা জেলেকে অপহরণ
- আরও এক ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হস্তান্তর করল হামাস
- টিভিতে আজকের কোন খেলা কোথায় দেখবেন
- রাজধানী ঢাকায় আজ কোথায় কোন কর্মসূচি
- সৌদিতে অননুমোদিত সভা-সমাবেশে অংশ না নিতে দূতাবাসের সতর্কতা
- কেনটাকিতে কার্গো বিমান বিধ্বস্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
- রাজধানীতে ট্রাকের ধাক্কায় যুবক নিহত
- ইউরোপীয় সামরিক জোটে অংশীদারের মর্যাদা পেল ইউক্রেন
- ‘আমজনতার দল’ শীর্ষ দশে না থাকলে রাজনীতি ছাড়বেন তারেক
- ট্রাম্পের হুমকি ‘অনিবার্য’ : মামদানি
- বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, একজন নিহত
- বাংলাদেশে পুলিশ সংস্কারে সহায়তার প্রস্তাব আয়ারল্যান্ডের
- ভোকেশনাল সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে ডিএমপির জরুরি নির্দেশনা
- দক্ষ জনশক্তি ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা বাড়াবে বাংলাদেশ-জাপান
- এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি মির্জা ফখরুলের
- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বাঁধন ১০ দিনের রিমান্ডে
নদী বাঁচাও ১৩
অবরুদ্ধ প্রমত্তা ডাকাতিয়া
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর