শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক জীবজন্তুর সমাহার

মোস্তফা কাজল, কক্সবাজার থেকে ফিরে

ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক জীবজন্তুর সমাহার

নান্দনিক ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বুনো জীবজন্তুর সমাহারে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ভিড় করছেন অগণিত দেশি-বিদেশি পর্যটক। তারা দর্শন করছেন হরেক রকম বন্য জন্তু আর পাখ-পাখালি- দুর্লভ গাছপালা। কক্সবাজার জেলা সদর           হতে উত্তরে চকরিয়া উপজেলায় পার্কটির অবস্থান। কক্সবাজার থেকে দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। আর চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণ পথে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। এ পার্কের আয়তন ৯০০ হেক্টর। এখানে পর্যটকরা বুনো জীবজন্তুর অবাধ চলাফেরা উপভোগ করতে পারছেন। পার্কে রয়েছে তথ্য শিক্ষা কেন্দ্র, প্রাকৃতিক ঐতিহাসিক জাদুঘর, পরিদর্শন টাওয়ার এবং বিশ্রামাগার। অনেকেই মনে করেন, কক্সবাজার বেড়াতে এলে এই সাফারি পার্ক ভ্রমণ না করলে প্রকৃত আনন্দ থেকেই বঞ্চিত হতে হয়। কারণ নগরায়ণের যুগে সবুজ শ্যামল গাছপালার ভিতর মুক্তভাবে বিচরণশীল প্রাণীর সমাহার দেখতে না পারাটা দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু নয়।  সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, পার্কটি ১৯৮০-৮১ সালে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে চালু হয়েছিল। বর্তমানে এটিকে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বুনো জীবজন্তুর নির্ভয় আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে বণ্যপ্রাণীদের প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিপালন করা হয়। সে কারণে দেশি-বিদেশি বন্য প্রাণীগুলো বংশবৃদ্ধি ও অবাধ বিচরণের সুযোগ পাচ্ছে। আর পর্যটকরাও স্রেফ পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে চড়ে দেখতে পারছেন। কর্তৃপক্ষ টিকিটের বিনিময়ে শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ করে দিয়েছে।  দেখা গেছে, নির্জন উঁচু-নিচু টিলা, প্রবহমান ছড়া, হ্রদ, প্রাকৃতিক বৃক্ষ, চিরসবুজ বনের সঙ্গে জানা-অজানা গাছ-গাছালি, ফল-ভেষজ উদ্ভিদ, লতা-পাতার ঘন আচ্ছাদনে গড়ে উঠেছে এই সাফারি পার্ক। ভিতরে রয়েছে ছায়াঘেরা পথ, সবুজ বনানী, গাছের সারি, পাখির কিচিরমিচির আর বানরের বিচরণ। সব কিছু মিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশ। প্রধান ফটকের বাম পাশে রয়েছে ডিসপ্লে ম্যাপ। অনায়াসে বাঘ-সিংহসহ অন্যান্য প্রাণী পর্যবেক্ষণ করার জন্য রয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। আছে পার্কের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। যে কেউ চাইলেই বাসে করে ঘুরে ঘুরে পুরো পার্ক দেখতে পারছেন। এই পার্কে বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে বাঘ, সিংহ, হাতি, ভালুক, গয়াল, কুমির, জলহস্তী, মায়া হরিণ, সাম্বা হরিণ, চিত্রা হরিণ, প্যারা হরিণ, মিঠা ও  নোনা পানির কুমিরসহ পাখ-পাখালির সমাহার। পথের ধারে উঁচু ওয়াচ টাওয়ারে উঠে যে কেউ দেখতে পারবেন পুরো পার্কের সীমানা পর্যন্ত। উপভোগ করতে পারবেন অপার সৌন্দর্য। পার্কের চারদিকেই রয়েছে বেষ্টনী। ফলে বন্যপ্রাণীর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আবার পার্কের ভিতরেও অভ্যন্তরীণ বেষ্টনী রয়েছে। এই বেষ্টনীর ভিতরেই বাঘ, সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণীর বিচরণ। এরা পুরো প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাস করছে। পার্কজুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য। এ ছাড়া পার্ক দর্শনের জন্য মিনিবাসের ব্যবস্থা আছে। মাঝে মধ্যে এ ব্যবস্থা বিনা অজুহাতে বন্ধ থাকে। ভিতরে রয়েছে দর্শনীয় বাংলো। প্রবেশ মূল্য : ২০ টাকা প্রবেশ ফি গুনতে হবে দর্শনার্থীদের। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা ও বিদেশিদের জন্য ৫০ টাকা। রয়েছে ২০ টাকায় গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর