গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের কোনো জায়গা নেই। স্বৈরতন্ত্র অনেকবার চেষ্টা করেছে এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে চিরস্থায়ী হতে। কিন্তু পারেনি। যারা মনে করেন গণতন্ত্রকে চাপা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, বিভিন্ন রকমের প্রভাব খাটিয়ে চিরস্থায়ী হওয়া যায় তাহলে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করেন। স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আবারও বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আসুন আমরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলি। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দেশের এই সংবিধান প্রণেতা এ আহ্বান জানান। সদ্য প্রয়াত বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর স্মরণে এই শোকসভার আয়োজন করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খানের সভাপতিত্বে শোক সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়াও অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, সাবেক কূটনীতিক শমসের মবিন চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, আওয়ামী লীগ নেতা নূহ আলম লেনিন, ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি রাশেদ খান মেনন, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবিরসহ বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকে আমি মোটেও নিরাশ নই। কারণ মাহফুজ উল্লাহকে শ্রদ্ধা জানাতে সব মহলের লোক এখানে একত্রিত হয়েছে। উনাকে সবাই সম্মান জানাচ্ছেন কেন, কারণ তিনি ঝুঁকি নিয়েছিলেন, সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। যখন উচিত কথা বলা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, তখন তিনি উচিত কথা বলেছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র নেই সে দেশে মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও লেখা কঠিন। কিন্তু মাহফুজউল্লাহ তা পেরেছেন। যে সমাজে কথা বলা দুঃসহ। সেখানে তিনি কথা বলেছেন, লিখে গেছেন। গণতন্ত্রহীন, অধিকারবিহীন রাষ্ট্রে মাহফুজউল্লাহ সত্য কথা বলার মধ্য দিয়ে আমাদের জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। আমাদের জেগে উঠতে হবে। তিনি বলেন, প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ সত্যকে সত্য বলতেন। মাহফুজউল্লাহ এমন সময় জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে বই লিখেছেন, যে সময় বুদ্ধিজীবীরা এই দুই নেতার ব্যাপারে মুখ খুলতে চান না। আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশে কঠিন দুঃসময় চলছে। এই সময় মাহফুজউল্লাহকে সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে আসুন- ঐক্য করি। স্বৈরাচারীর বিদায় ঐক্য ছাড়া হবে না।
মেননের বক্তব্য বয়কট ওলফাতের : রাশেদ খান মেননের বক্তব্য বয়কট করেছেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ ওলফাত। মেননের বক্তব্যের শুরুতেই ইশতিয়াক আজিজ ওলফাত সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলেন, সবার প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আমি রাশেদ খান মেননের বক্তব্য শুনব না, তার বক্তব্য না শুনেই আমি বের হয়ে যাচ্ছি। তবে কী কারণে তিনি বয়কট করলেন সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।