শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

গাড়িতেই গলা কাটা লাশ উবার চালকের খুনের ক্লু মেলেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় উবারচালক মোহাম্মদ আরমান (৩৭) খুনের ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ। গাড়ি কিংবা আরমানের কাছ থেকে কোনো কিছু খোয়া না যাওয়ায় নানা প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে। পূর্বশত্রুতা নাকি স্রেফ গাড়ি ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে তাকে খুন করা হয়েছে- এসব বিষয় নিয়েই কাজ করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৫২ নম্বর বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়ানতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। চালকের আসনে বসে থাকা আরমানকে পেছন থেকে ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলে পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। তবে আরমানের খুন নিয়ে নানা রহস্যের অবতারণা হয়েছে। জানা গেছে, আরমান রাইড শেয়ারিংয়ের উবারচালক ছিলেন। আরমান পাবনার ঈশ্বরদী থানার ফতে মোহাম্মদপুরের আটকে পড়া পাকিস্তানি মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে। মিরপুরের ১১ নম্বরে ১২ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর লেনের ১৬ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। আরমান যে গাড়ির চালক ছিলেন, সে গাড়ির মালিক মিরপুর ১১ নম্বরের ৬ নম্বর লেনের ১২ নম্বর সড়কের এক ব্যবসায়ীর। তার সাতটি প্রাইভেটকার রয়েছে। সবকটিই উবারে ভাড়া দেওয়া। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে ছায়া তদন্ত করছি। অনেক সম্ভাব্য কারণকে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। আশা করছি শিগগিরই ক্লু উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

 জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গাড়িতে যাত্রী নিয়ে আরমান উত্তরার দিকে রওনা হয়েছিলেন। এরপর তার অবস্থান উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরে। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় তার গাড়ি সামনের দিকে এগোনোর দৃশ্য ধরা পড়েছে। এর বাইরে গাড়িতে সে ছাড়াও কয়জন ছিল, কখন তাকে হত্যা করা হয়, হত্যার পর খুনি কীভাবে বের হয়, খুনি কয়জন ছিল তার কিছুই সিসিটিভির ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, আরমানকে ছিনতাইকারীরা হত্যা করলে গাড়িটি কেন ফেলে রেখে যাবে। তার গাড়ি থেকে কোনো কিছু খোয়া যায়নি। সবমিলে ঘটনাটি খুবই রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তবে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাক তাদের দ্রুতই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গাড়ির মালিকের ছোট ভাই অন্তর বলেন, রামপুরার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে রাত ১১টা ২১ মিনিটে উবারে কল পেয়ে যাত্রী নিয়ে উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে আসেন চালক আরমান। সেখানে ১২টা ৪ মিনিটে তার ট্রিপ শেষ করে মিরপুরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রাত ১টার বেশি বেজে গেলেও তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় ড্রাইভার আরমানকে ফোন দিই। তখন অন্য একজন ফোন রিসিভ করে জানান, তার দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর আমাকে দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। পরবর্তীতে আমি আরেকটি গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি গাড়ির ভিতর আরমানের গলাকাটা লাশ। অন্তর আরও বলেন, আরমান প্রায় এক বছর যাবৎ আমাদের গাড়ি চালাতেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে আমরা দুজন মিরপুরের একটি হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেছিলাম। পরে তিনি আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর