রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মাশরুম চাষ পাহাড়ে

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

মাশরুম চাষ পাহাড়ে

পাহাড়ে মাশরুম চাষে গড়ে উঠছে আত্মকর্মসংস্থান। কমছে বেকারত্ব। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে মাশরুম চাষে। ফলনও হচ্ছে বাম্পার, তাই লাভ বেশি। শুধু রাঙামাটির বাজারে নয়, বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

এরই মধ্যে পাহাড়ে উৎপাদিত মাশরুমের নাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সব খানে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে রাঙাপানি এলাকা। এখানে কয়েকটি পাহাড়ি পল্লী রয়েছে। এ গ্রামের মানুষগুলো প্রায় সবাই আত্মনির্ভরশীল। কৃষি, খামার, সেলাই, বুননসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাদের নিজেদের উদ্যোগে প্রায় প্রতিটি ঘরে গড়ে উঠেছে মাশরুম চাষ। মাশরুম চাষ করে এ গ্রামে অনেকেই এখন লাখপতি। মাশরুম চাষের জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য। বেকার যুবক-যুবতী এবং মহিলারা ঘরে বসেই এর চাষ করতে পারেন। অন্যান্য সবজির তুলনায় বাজারে এর দাম অনেক বেশি, এজন্য এটা চাষ করা অত্যন্ত লাভজনক। গ্রীষ্মকালে যে কোনো চালা ঘরের নিচে এবং বারান্দায় চাষ করা যায়। মাশরুম পুষ্টিকর এবং ওষুধিগুণসম্পন্ন একটি উৎকৃষ্ট সবজি। পাহাড়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুু মাশরুম চাষের জন্য উপযোগী। রাঙাপানি এলাকার মাশরুম চাষি পলাশ কুশুম চাকমা জানান, মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভজনক। শখের বসে স্বল্প পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করেন। বাম্পার ফলন হওয়ার পর এ চাষের আগ্রহ বেড়ে যায় তার। এরপর ব্যাপক আকারে শুরু করে মাশরুম চাষ। নিজের জমিতে দোচালা একটি ঘরের মধ্যে গড়ে তুলেন মাশরুমের খামার। নিয়মিত পরিচর্যা করার পর ফলনের মাত্রা বাড়তে তাকে। তার দেখাদেখি এলাকায় প্রায় প্রতিটি ঘরে মাশরুম চাষ শুরু করে প্রতিবেশীরা। তার উৎপাদিত মাশরুমে এখন সব বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি শুধু মাশরুম বিক্রি করে এখন লাখপতি। বাণিজ্যিক ভাবে পি ও টু (সাদা জাতের) মাশরুম এবং পিএসসি (ছাই রঙের) মাশরুমের চাষ করা হচ্ছে। চাষাবাদে কোনো খরচ নেই বললেই চলে। জমির প্রয়োজন হয় না।  খড়ের বেডে মাশরুম চাষ সাধারণত দুধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রথম ১৭ থেকে ২০ দিন ওমঘর তারপর ফসল উৎপাদনের জন্য চাষঘরে ২১ দিন থেকে ৪৫ দিন। এরপর মাত্র ৭-১০ দিনের মধ্যেই মাশরুম পাওয়া যায়। বীজের অভাবে অনেকেই মাশরুমের চাষ বৃদ্ধি করতে পারছেন না। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাপক সম্ভাবনা থাকার পরও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে রাঙামাটি জেলার উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সঙ্গে মাশরুম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয় না থাকার কারণে সম্ভাবনাময় মাশরুম চাষ সফলতা পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আপ্রু মারমা বলেন, পাহাড়ে মাশরুমের বিশাল চাহিদা রয়েছে। মাশরুম প্রকল্পটা কর্মসূচির পর্যায়ে পড়ছে। তাই আর্থিক সংস্থানটা আগের চেয়ে কম। পাশাপাশি মাশরুম চাষের উপকরণ খড়, কাঠের গুঁড়া, আখের ছোবড়া এখানে পাওয়া যায় না। এসব রাঙামাটি থেকে দূরে চট্টগ্রামের হাটাজারি থেকে সংগ্রহ করতে হয়। বহন খরচ অনেক বেশি। স্প্যান প্যাকটা সেভাবে উৎপাদন করা যাচ্ছে না। তাই চাষিদের বীজের প্রয়োজনীয়তা মিটানো সম্ভব হচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর