মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের হাওর ১

নিকলীর জল-আকাশ সৌন্দর্যের হাতছানি

ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে পানির ওপর ভাসমান অসম্ভব সুন্দর ছোট ছোট সবুজ গ্রাম। নৌকা থামিয়ে গ্রামটি একটু ঘুরে আসতে পারেন। অবাক হবেন মানুষগুলোর কাছে গিয়ে কথা বললে।

মোস্তফা কাজল নিকলী হাওর, কিশোরগঞ্জ থেকে ফিরে

নিকলীর জল-আকাশ সৌন্দর্যের হাতছানি

পর্যটক আকর্ষণে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের হাওর অঞ্চল। এসব হাওরের জল ও আকাশের নান্দনিক সৌন্দর্য দেখে যে কেউ বিমোহিত হবেন। এখানে এলে পানির ওপর ভাসতে ভাসতে নীল আকাশের দিকে যখন তাকাবেন এক নিমেষেই দূর হয়ে যাবে নাগরিক জীবনের সব ক্লান্তি। দিগন্তজোড়া জলরাশি আপনাকে বলতে বাধ্য করবে, পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। আর এটি হলো কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী হাওর। একসময় পানিতে ভাসতে ভাসতে হাওরের ভিতরের দিকে গেলে যখন কোনো গ্রাম  দেখা যাবে না, তখন হাওরকে আপনার কাছে শান্ত এক সাগরের মতো মনে হতে পারে। আবার ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে পানির ওপর ভাসমান অসম্ভব সুন্দর ছোট ছোট সবুজ গ্রাম। নৌকা থামিয়ে গ্রামটি একটু ঘুরে আসতে পারেন। অবাক হবেন মানুষগুলোর কাছে গিয়ে কথা বললে। আপনার কাছে মনে হবে পানির সঙ্গে বসবাস করতে করতে এ অঞ্চলের মানুষগুলোর স্বভাব-চরিত্রও পানির মতো হয়ে গেছে। হাওরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অচিরেই নিকলী হাওর এলাকায় হোটেল মোটেল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া নদীতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্যাডেল বোট রাখা হবে। শিগগিরই উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে হাওরের মাছ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

নিকলী হাওরে ঘুরতে আসা ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী তমা সুলতানা বলেন, এখানকার বিশাল জলরাশির ওপর নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে যে কেউ উদাস হতে বাধ্য। এমন জায়গায় নিজের মতো করে ঘুরতে পেরে খুশি সবাই। এভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে নিকলী হাওরের সুনাম। তাই সুযোগ পেলেই ভ্রমণপিপাসুরা ছুটছেন হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এ ছাড়া ভরপুর কোনো পূর্ণিমা রাতের গাঢ় নীলচে আকাশের নিচে নৌকার ছাদে কাটিয়ে দিতে পারেন পুরো রাত। এখানে রাতে থাকাটা মোটামুটি নিরাপদ। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে। হাওরে ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়বে গ্রামের বাজার। চাইলে কিনে নিতে পারেন হালকা নাস্তা। খোলা আকাশের নিচে  নৌকার ছাদে বসলে পাবেন নির্মল আনন্দ। ঘুরতে ঘুরতে চলে  যেতে পারেন ছাতিরচরে। ইচ্ছা করলে কিনতে পারবেন খাঁটি গরুর দুধ। নিকলী বেড়িবাঁধ থেকে নৌকায় সরাসরি ছাতিরচর  যেতে ঘণ্টাখানেক লাগে। নৌকায় ঘোরাঘুরির সময় অনেক জায়গায় যেতেও পারবেন। এখানে সাধারণত ১ ঘণ্টার জন্য ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া নেয়। ১৫-২০ জন অনায়াসে ঘুরতে পারবেন এসব নৌকায়। নৌকার আকার অনুযায়ী ভাড়া খুব একটা কমবেশি হয় না। তাই বড় নৌকা নেওয়াটাই ভালো। নিকলীতে খাবারের জন্য বাজারে কয়েকটি রেস্তোরাঁ আছে। এ ছাড়া বেড়িবাঁধে ঢোকার সময় একটি রেস্তোরাঁ আছে। খাবার ব্যবস্থা হলে পূর্ণিমা রাতে নৌকার ছাদে কাটিয়ে দিতে পারেন পুরো রাত। রাতে অবশ্যই বেড়িবাঁধের কাছাকাছি থাকতে হবে। নইলে কিছুটা নিরাপত্তাজনিত সমস্যা থেকে যেতে পারে। এ ছাড়া নিকলী থানা পুলিশের একটি ডাকবাংলো আছে। সেখানেও থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর