সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

যুক্ত হবে ৮০ লাখেরও বেশি নাগরিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্ত হবে ৮০ লাখেরও বেশি নাগরিক

এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ৮০ লাখেরও বেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী (২০০১-২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম) এসব নাগরিকের ছবি, চোখের আইরিশ ও দশ আঙ্গুলের ছাপসহ নিবন্ধন কাজ নভেম্বরে শেষ হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালে পর্যায়ক্রমে ভোটারযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করা হবে। আগামী ২০২৩ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বড় আকারের এ হালনাগাদ হলো। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হবে তাদের নাম খসড়া তালিকায় প্রকাশ করা হবে। দাবি-আপত্তি-নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে তাদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। হালনাগাদের পর প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশ ও ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বিধান থাকলেও এবার আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিদ্যমান সময়সীমায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, এবার মনে হয় ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে না। ভোটার দিবসকে সামনে রেখে ২০ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশ করে ১ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে চাই। আমরা এ বিষয়টির জন্য বিদ্যমান আইন সংশোধনে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আইনি সংশোধনের প্রয়োজনীয় ধাপগুলো চলতি মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি। হালনাগাদের আগে বর্তমানে দেশের ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১ জন ভোটারের মধ্যে ৫ কোটি ২৫ লাখ ১২ হাজার ১০৫ জন পুরুষ আর ৫ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৭৬ জন নারী। অর্থাৎ ভোটার তালিকায় পুরুষ ও নারীর অনুপাত ৫০.৪২ : ৪৯.৫৮। ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। প্রথমবারের মতো ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত হয়। এরপর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ ও মৃতদের বাদ দেওয়াসহ হালনাগাদের কাজ চলে। ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে হালনাগাদ করা হয়। এবার সারা দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল।

হালনাগাদ ২০১৯ : এ হালনাগাদে (১৫-১৮ বছর বয়সী) চার বছরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এরকম নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন করা হয়। এর মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের নাম ২০২০ সালে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর যাদের বয়স এখনো ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি, তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হলে ২০২২ সালের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

লোকবল : ৫২ হাজার ৫০০ জন তথ্য সংগ্রহকারী; ১০ হাজার ৫০০ জন সুপারভাইজার ও ৭৮০ জন সহকারী রেজিস্ট্রেশন অফিসার এই কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত ছিলেন। এ যাত্রায় প্রায় ৮০ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটারের পাশাপাশি মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে ও ভোটার স্থানান্তরের আবেদন নেওয়া হয়।

ইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, দু-একদিনের মধ্যে একীভূত তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে ১৫ বছর বয়সী, ১৬ বছর বয়সী, ১৭ বছর বয়সী ও ১৮ বছর বয়সীদের পূর্ণাঙ্গ ও আলাদা তথ্য সরবরাহ সম্ভব হবে। দেশে বর্তমানে ১০ কোটি ৪২ লাখের মতো ভোটার রয়েছে। মৃতদের বাদ দিয়ে মোট ভোটারযোগ্যদের হালনাগাদ তথ্য জানানো হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯০ লাখ ৬৬ হাজারের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০২০ সালের ভোটারযোগ্য নাগরিক তুলনামূলকভাবে কম থাকবে। তবে কম বয়সীদের (১৫-১৭) সংখ্যাই বেশি হবে, যারা ২০২১, ২০২২ সালে ভোটার তালিকাভুক্ত হবে।

সর্বশেষ খবর