সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বইয়ের সমাহার স্টলে স্টলে

মোস্তফা মতিহার

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বইয়ের সমাহার স্টলে স্টলে

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চলতি বছরটিকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই মহানায়কের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলাও উৎসর্গ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। যার কারণে মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নের ডিজাইন, বিভিন্ন চত্বর, মূল মঞ্চের আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চিত্রাঙ্কন ও সংগীত প্রতিযোগিতার সবকিছু জুড়েই রয়েছেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গকৃত মুজিববর্ষের এবারের গ্রন্থমেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলা একাডেমি শতাধিক বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’সহ বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ২৬টি গ্রন্থ। প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সৈয়দ শামসুল হক রচিত শিশুতোষগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা’, হারুন-অর-রশিদের ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব : কী ও কেন’, অজয় দাশগুপ্তের ‘বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন কৌশল ও হরতাল’, নূহ-উল-আলম লেনিনের ‘রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব’ এম আবদুল আলীমের ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা-আন্দোলন’, সুব্রত বড়–য়ার লেখা ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনকথা’ আসাদ চৌধুরীর ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’ শাহ্জাহান কিবরিয়ার লেখা ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ পিয়াস মজিদের ‘মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি’, অনুপম হায়াতের ‘বঙ্গবন্ধু ও চলচ্চিত্র’, মোহাম্মদ আলী খানের ‘ডাকটিকিট ও মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু’সহ আরও বেশ কয়েকটি বই। আর প্রকাশের অপেক্ষায় আছে জালাল ফিরোজের ‘বঙ্গবন্ধু গণপরিষদ সংবিধান’, সাইমন জাকারিয়ার ‘সাধক কবিদের রচনায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনীতি’, সমীর কুমার বিশ্বাসের ‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় বাংলা’ প্রভৃতি বই। আর আগামী দুই বছর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরও ১০০টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি ছাড়াও বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশ করেছে আরও শতাধিক বই। এর মধ্যে অন্যপ্রকাশ থেকে বের হয়েছে সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে’, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স এনেছে সেলিনা হোসেনের লেখা ইংরেজি গ্রন্থ ‘আওয়ার বিলাভড শেখ মুজিব’, একই প্রকাশনা থেকে এসেছে মোনায়েম সরকারের ‘লাইফ এন্ড টাইমস অব দি ফাদার অব দি ন্যাশন ‘শেখ মুজিবুর রহমান’, সময় থেকে এসেছে ফরিদুর রেজা সাগর সম্পাদিত ‘তোমার নেতা আমার নেতা’ একই প্রকাশনা থেকে এসেছে সুভাষ সিংহ রায়ের ‘পাঠক বঙ্গবন্ধু লেখক বঙ্গবন্ধু’, অনন্যা এনেছে অধ্যাপক আবু সাইয়িদের ‘তোমার আলোকে রহিব জাগিয়া’, শোভা প্রকাশ এনেছে আবুল আহসান চৌধুরীর ‘বঙ্গবন্ধু : অন্নদাশঙ্কর রায়ের স্মৃতি-অনুধ্যানে, লাবণী এনেছে শাবান মাহমুদের ‘বঙ্গবন্ধু’র সারা জীবন’ ও ‘বাঙালির আত্মপরিচয়’, পারিজাত প্রকাশনী এনেছে সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন রচিত ‘বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু’ ও শেখ নজরুলের ‘বঙ্গবন্ধু শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ একাত্তর প্রকাশনী এনেছে কামরুজ্জামান লিটন সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত ভাষণ’, ম্যাগনাম ওপাস থেকে বের হয়েছে চৌধুরী আনোয়ার রচিত ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’সহ প্রায় শতাধিক বই। আর এই বইগুলোতে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা, সংগ্রাম, রাজনৈতিক জীবন ও ভাষা আন্দোলনের নানা অজানা কাহিনি। মেলার শেষদিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত হবে আরও বেশ কয়েকটি বই। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বইয়ের প্রকাশকরা জানান, এই বইগুলো পাঠের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর অনেক অজানা অধ্যায়, বর্ণিল রাজনৈতিক ও সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে। এদিকে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মেলার ১৫তম দিনে নতুন বই এসেছে ১৪৬টি।

মোহাম্মদ হোসেনের ‘মায়ের গোপন ডায়রি’ : বইমেলায় এসেছে লেখক মোহাম্মদ হোসেনের উপন্যাস গ্রন্থ ‘মায়ের গোপন ডায়রি’। ১৪০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে- অধ্যয়ন প্রকাশনী। দাম ২৭০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন আরাফাত করিম। লেখকের এটি ১২তম গ্রন্থ। বইটি লেখক তার বন্ধু সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানকে উৎসর্গ করেছেন। মহিউদ্দিন আহমদের ‘বেলা অবেলা : বাংলাদেশ ১৯৭২-১৯৭৫’ : বইটির লেখক মহিউদ্দিন আহমদ। প্রকাশক : বাতিঘর। অমর একুশে বই মেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৪৩-৪৪৫ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে। ৩৭৬ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ৭০০ টাকা। বইটিতে লেখক ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের নবযাত্রার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

তিনি লিখেছেন, ‘৭২-এ একটি ধংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়াল বাংলাদেশ। সরকারের হাল ধরল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে  দেশে অনেক ওলটপালট হয়ে গেছে। জনজীবনের স্বাভাবিক ছন্দ গেছে হারিয়ে। সংসদীয় রাজনীতির পাশাপাশি জন্ম নিয়েছে গোপন রাজনীতির সশস্ত্র ধারা। তিন বছর যেতে না যেতেই হোঁচট খেল সংবিধান। দেশে জারি হলো জরুরি অবস্থা, এক দলীয় সরকার ব্যবস্থা। পঁচাত্তরের আগস্টে ঘটল রক্তাক্ত পালাবদল।’ মূলমঞ্চ : বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় পিয়াস মজিদ রচিত ‘মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি’ শীর্ষক আলোচনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক শাহিদা খাতুন। আলোচনায় অংশ নেন কবি শিহাব সরকার এবং গবেষক ড. ইসরাইল খান। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। শেষে কবিতা পাঠ করেন মাসুদুজ্জামান, মাহবুব আজীজ, জাহানারা পারভীন এবং আশরাফ জুয়েল। আবৃত্তি করেন শিরিন ইসলাম, আজিজুল বাসার এবং মনিরুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিশ্বভুবন’, নাচের দল জিনিয়া নৃত্যকলা একাডেমি এবং ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর