চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই কওমি ও সুন্নি মতাদর্শী ইসলামী দলগুলোর। তাই এবার সিটি নির্বাচনে মেয়র কিংবা কাউন্সিলর পদে কাউকে মনোনয়ন দিচ্ছে না প্রায় সব ইসলামী দল। নিজেদের কোনো প্রার্থী না দিলেও শরিক দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। তবে সিটি নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন চিন্তায় রয়েছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী। নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটি কাউন্সিলর পদে জোটের শরিক দলের সঙ্গে রফাদফা করার চিন্তা করছে। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। নির্বাচনে আমরা কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না। নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পূর্ণ সমর্থন দেব।’ ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। তাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আমরা কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না।’ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন বলেন, ‘সিটি নির্বাচন করার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেবে না। কোনো দলের প্রার্থীকে সমর্থনও দেবে না। তবে এ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।’ জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির বলেন, ‘কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের। তাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না।’ জানা যায়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলো। তাই বিগত সময়ে জাতীয় সংসদ ও বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী ঐক্য জোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিসসহ অন্য দলগুলো। যাতে বিজয়ীও হয়েছেন কেউ কেউ। সর্বশেষ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের মনোনীত প্রার্থী মেয়র নির্বাচন করেন। কিন্তু এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই সিংহভাগ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের। তাই তাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়া নিয়ে নেই কোনো আগ্রহ। তবে কোনো কোনো দল নির্বাচনে কোনো প্রার্থী না দিলেও জোট শরিক প্রার্থীদের তারা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সমর্থন দেবে। অন্যান্য ইসলামী দল শরিকদের ছাড় দেওয়ার কথা ভাবলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী করছে ভিন্ন চিন্তা। তারা মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে তারা আলাপ-আলোচনাও করছে। তবে দলের একাধিক সূত্র দাবি করেছে- কাউন্সিলর পদে নিজেদের প্রার্থীদের সমর্থন আদায় করতে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেবে জামায়াত সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। পরবর্তীতে কয়েকটি কাউন্সিলর পদে বিএনপির সমর্থন আদায় করার পর মেয়র প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে জামায়াত প্রার্থী।