মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

রপ্তানির বহুমুখী শিল্পে নজর দিতে হবে

--- এম এম আকাশ

রপ্তানির বহুমুখী শিল্পে নজর দিতে হবে

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেছেন, ‘আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন নীতি হচ্ছে রপ্তানিকেন্দ্রিক। আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য একটিমাত্র পণ্যনির্ভর- পোশাকশিল্প। রপ্তানির অন্য খাতগুলো এখানে দাঁড়াতে পারেনি। বর্তমান সংকটে এই রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হবে। সে জন্য এখনই পরিকল্পনা নিয়ে শিল্পের বহুমুখী উদ্যোগের দিকে যেতে হবে।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এম এম আকাশ বলেন, ‘অর্থনীতির ভাষায় বলে- সব ডিম এক খাঁচায় রাখা যাবে না। ভিন্ন ভিন্ন খাঁচায় রাখতে হবে। তাহলে একটি খাঁচা ভেঙে গেলেও সব ডিম নষ্ট হবে না। আমাদের কর্মসংস্থান, রপ্তানি বাণিজ্য একটি খাঁচায় রাখা হয়েছে। বহু খাঁচায় থাকলে এখন সংকট মোকাবিলা সহজ হতো। পোশাক খাতে প্রায় ৪০ লাখ কর্মী কাজ করেন। এই সংকটের সময় যদি ১০ শতাংশ পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ৪ লাখের বেশি লোক চাকরি হারাবেন।’ তিনি বলেন, একদিকে চাকরি হারাবে, অন্যদিকে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। ফলে নতুন করে যারা শ্রমবাজারে ঢুকবেন তারা কাজ পাবেন না। সেটি আমাদের মতো অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের শিল্পের বহুমুখীকরণ খুব জরুরি। সে জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে।

 বড় খাতের মধ্যে পাট, চামড়া, সুতা, কৃষিনির্ভর শিল্পে রপ্তানি পণ্য উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এসব খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও সম্ভব। নতুন করে এসব শিল্পে অর্থায়ন করতে হবে।’ এম এম আকাশ বলেন, সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ দিয়েছে, সেটি তিন বছরের মধ্যে ফিরে আসবে। সেখান থেকে রিভলবিং ফান্ড গঠন করে নতুন খাতে ঋণ দিতে হবে। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অনেক উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসা পরিবর্তন করতে চাইবেন। অনেক পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাও ব্যবসা পরিবর্তন করতে পারেন। তাদের নতুন অর্থায়ন করে সুবিধা দিতে হবে। অর্থাৎ শ্রমঘন শিল্প হিসেবে যেসব খাত পরিচিত, সেখানে অর্থায়ন করলে, মনিটরিং করলে দ্রুত পরিস্থিতি পরিবর্তন করা সম্ভব হবে। এই পোশাকশিল্পনির্ভর রপ্তানি খাত থেকে যেভাবেই হোক আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। যে শ্রমিকরা চাকরি হারাবেন, তাদের সোশ্যাল সিকিউরিটি ফান্ডের আওতায় নিতে হবে। তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর