শনিবার, ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

কক্সবাজারে নতুন করে আতঙ্ক

এক দিনে আট রোহিঙ্গাসহ ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারে নতুন করে আতঙ্ক

কক্সবাজারে নতুন করে একদিনে সর্বোচ্চ ৩৬ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। এর আগে গত ১৯ মে চার রোহিঙ্গাসহ সর্বোচ্চ ২৬ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এভাবে প্রতিদিনই বাড়ছে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এর ফলে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জেলাবাসীর মাঝে। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত করোনা ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা ১৭৪টি নমুনা। এর মধ্যে ২৮টির রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আরও আটজনের করোনা পজিটিভ হয়। এনিয়ে জেলায় ৫২তম দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২১ রোহিঙ্গাসহ মোট ৩০৪ জনে। গতকাল বিকালে নিশ্চিত এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া ও স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী আরআরআরসির ডা. আবু তোহা।

ডা. অনুপম বড়ুয়া জানান, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের করোনা ল্যাবে ১৭৪ জনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এর মধ্যে জেলায় নতুন ২৮ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। বাকি ছয় জন পূর্বের আক্রান্ত (সদরের-৩ জন, চকরিয়ার-১, রামুর- একজন ও নাইক্ষ্যংছড়ির একজন ফলোআপ)। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করেও তাদের শরীরে করোনা পজিটিভ আসে। আক্রান্তদের মধ্যে চকরিয়ার-১৯ জন, সদরের দুজন, পেকুয়ার একজন, রামুর- একজন ও মহেশখালীর পাঁচজন। এ ছাড়া একইদিন ৮ রোহিঙ্গারও করোনা পজিটিভ হয়েছে বলেও জানান আরআরআরসির স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. ডা. আবু তোহা। আর কক্সবাজার জেলায় ৫২তম দিনে এই ৩৬ জনকে নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ রোহিঙ্গাসহ মোট ৩০৬ জন। এর মধ্যে মাত্র শেষ ১৮ দিনেই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২১ জনসহ মোট ২৫৯ জন। এদিকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা এম আর এইচ ভুঁইয়া  জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬টি পরীক্ষার মধ্যে ৮ রোহিঙ্গার করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও তিনজন মহিলা। আক্রান্তদের সাতজন ক্যাম্প-১ এবং একজন ক্যাম্প-২৬ এর বাসিন্দা। তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ২৯৬ জন রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এর মধ্যে ২১ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আক্রান্ত সবাইকে আইসোলেশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে আক্রান্ত বেশি চকরিয়া উপজেলায়। এখানে মোট আক্রান্ত ১০২ জন। এ ছাড়াও দ্বিতীয় অবস্থানে সদর উপজেলা ৮৭ জন। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উখিয়া। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩৬ জন। এর পরে রয়েছে পেকুয়ায় ২৭ জন, মহেশখালীতে ১৮ জন, টেকনাফে নয়জন, রামুতে ছয়জন ও কুতুবদিয়ায় একজন। এ ছাড়া শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা রয়েছে ২১ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনজন। আর রামু ও চকরিয়া হাসপাতালের আইসোলেশন থেকে করোনায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫ জন। ঈদ ঘিরে কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন স্থানে জামা-কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে মহিলা-পুরুষরা ভিড় করে ঈদের কেনাকাটা করছেন। এ কারণে জেলায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

 

সর্বশেষ খবর