মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রস্তুত শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল

কবে থেকে করোনা রোগী ভর্তি কেউ জানে না

জয়শ্রী ভাদুড়ী

কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে কভিড রোগীদের জন্য ১২০টি বেড ও ১৪টি আইসিইউ বেড প্রস্তুত অবস্থায় আছে। রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক-নার্সদের ডিউটি রোস্টারও তৈরি করা হয়েছে। তবে এখনো হাসপাতালটিতে কভিড-১৯ রোগী ভর্তি করা হয়নি। কবে থেকে রোগী ভর্তি করা হবে সে বিষয়েও কিছুই জানে  না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘রোগী ভর্তি করার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয় কাজ করে। এ সিদ্ধান্তগুলো ওপর থেকে আসে। আমাদের এখনো রোগী ভর্তি করতে বলা হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘দুই মাস ধরে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। প্রস্তুতির তো শেষ নেই। তবে আমাদের  যে প্রস্তুতি আছে তা দিয়ে রোগী এলে আমরা চিকিৎসা দিতে পারব।’ দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় শুধু কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা হতো। মার্চের শেষের দিকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল উত্তরা ও মিরপুর এবং যাত্রাবাড়ীর সাজিদা ফাউন্ডেশনে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা  দেওয়ার জন্য নির্ধারিত করা হয়। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল বাদে অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে কভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪৯ হাজার ৫৩৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬৭২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫৯৭ জন। আগে বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার্ড করা হলেও এখন রোগীরা নিজেই কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে যান বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাজধানীতে ১৫টি কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল রয়েছে।’ শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা নিতে বা ভর্তি হতে রোগী  গেলেও তাদের ফেরত যেতে হয়। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘আমাদের আউটডোরে রোগী আসে ও টেলিমেডিসিনে ভর্তির বিষয়ে অনেক ফোন আসে। তবে আউটডোর ও টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হলেও ইনডোর এখনো খালি আছে।’ ২৫০ বেডের এ হাসপাতালে কভিড রোগীর জন্য ১২০টি বেড আছে (কভিড রোগীর জন্য বেডের স্পেস সাধারণ বাড়তে হয়)। এ ছাড়া কেবিন আছে ২০টি। সারা দেশে যখন কভিড রোগীদের আইসিইউর জন্য হাহাকার তখন এ হাসপাতালের ১৪টি আইসিইউ বেড রেডি থাকলেও রোগী নেই। কভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক-নার্সদের রোস্টার করা হয়েছে বলে জানান পরিচালক ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, এ হাসপাতালে আগে ৪৫ জন নার্স ছিল, নতুন করে ২০০ নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রেগনেন্ট ও ল্যাকটেটিং মাদার নার্সদের বাদ দিয়ে রোস্টার করা হয়েছে। কাজ চালানোর জন্য ডাক্তার পর্যাপ্ত আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কভিড-১৯ মিডিয়া সেলের প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পরও রোগী ভর্তি না নেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রোগী নিতে নিষেধ করা হয়নি। হাসপাতাল রেডি করা হয়েছে রোগী নেওয়ার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ হাসপাতালে রোগী ভর্তির জন্য কী পারমিশন প্রয়োজন- সে বিষয়ে আমি পরিচালকের সঙ্গে কথা বলব। এ হাসপাতাল রেডি আছে, যে কোনো মুহূর্তে চালু করা হবে।’ এর আগে এপ্রিল মাসে শোনা যাচ্ছিল ভিআইপি ও কূটনীতিবিদের জন্য রেডি করা হচ্ছে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল। এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভিআইপিদের জন্য আলাদা কোনো হাসপাতাল করার চিন্তা নেই। রোগীর আবার ভিআইপি কী? করোনাভাইরাস যেমন বাছ-বিচার করছে না, তেমন সরকারি ফ্যাসিলিটিও সবার জন্য সমান।’

সর্বশেষ খবর