বুধবার, ৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে পরিবহন শ্রমিক দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে পরিবহন শ্রমিক দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ৫০

সিলেটে গতকাল পরিবহন শ্রমিকদের দুইপক্ষের সংঘর্ষ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র‌্যাব ও পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে শ্রমিকদের একটি পক্ষ আন্দোলনে নামলে গতকাল বিকালে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, গত ঈদুল ফিতরের আগে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবহন শ্রমিকরা  ঈদসামগ্রী কেনার জন্য শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের কাছে অর্থ সহায়তা চান। এ সময় ফলিক কোনো ধরনের সহায়তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। শ্রমিকরা কল্যাণ তহবিলের টাকার হিসাব চাইলে ক্ষেপে গিয়ে ফলিক শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় শ্রমিক নেতা সেলিম আহমদ ফলিকের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল দুপুর থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। তারা ফলিকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বিকাল ৪টার দিকে কদমতলী বাসটার্মিনাল এলাকায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ থামাতে র‌্যাব ও পুলিশকে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়। বিকাল পৌনে ৬টার দিকে সেলিম আহমদ ফলিকের অনুসারীরা ফের টার্মিনাল এলাকায় জড়ো হলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই দফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। এ প্রসঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠন ‘মিতালী শ্রমিক ইউনিয়নে’র সাংগঠনিক সম্পাদক মিলাদ আহমদ রিয়াদ বলেন, ‘শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকা থাকার কথা। কিন্তু সেলিম আহমদ ফলিক আমাদের হিসাব দিয়েছেন মাত্র ৪১ লাখ টাকার। বাকি ২ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের পুরো টাকার হিসাব না দিলে তাকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ও সংঘর্ষের বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল বলেন, ‘সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ ছাড়া র‌্যাব ৩ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। উভয়পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন সংঘর্ষে।’ সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, ‘সংঘর্ষ থামানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব জানা যায়নি এখনো।’

সর্বশেষ খবর