বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

আকাশে শত শত বাহারি ঘুড়ি

নাটোর প্রতিনিধি

আকাশে শত শত বাহারি ঘুড়ি

যাদের দুরন্তপনায় মেতে থাকার কথা, সেই শিশু-কিশোররা কার্যত এই দুঃসময়ে ঘরবন্দী। এই বন্দীদশা থেকে পরিত্রাণ পেতে উত্তরের জেলা নাটোরে শিশু-কিশোরদের অনেকেই মেতে উঠেছে ঘুড়ি উৎসবে। রাতের আকাশে শত শত আলোকিত ঘুড়ি উড়ছে জেলা ও উপজেলার গ্রামগুলোতে। ঘুড়িগুলোর মধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা রঙের এলইডি বাতি। লকডাউনের মধ্যে এই ঘুড়ি ওড়ানোর দৃশ্য রাতের প্রকৃতিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। অনেকে বলছেন, মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন যেন করোনামুক্ত ভোরের বার্তা। করোনা পরিস্থিতিতে থমকে যাওয়া জনজীবনে স্বস্তির এক ছোঁয়া নিয়ে নাটোরের আকাশে উড়ছে শত শত বাহারি ঘুড়ি। লাল, নীল, সাদা, কালো, হলুদ, খয়েরি- এ যেন প্রকৃতির এক অবাক করা মনোরম দৃশ্য। বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের মাঠে, শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদে, খোলা মাঠে, রেললাইনের ধারে এ যেন বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যে শোভিত এক রঙিন পরিবেশ। ছোট, বড় লম্বা, চিকন অনেক রকম ঘুড়ি উড়ছে আকাশজুড়ে। তা ছাড়াও কেউ কেউ ঘুড়ি ওড়ানোর টিম বানিয়ে দিন-রাত পরিশ্রম করে তৈরি করছে, মিসাইল ঘুড়ি, কয়রা ঘুড়ি, চিল ঘুড়ি, সাপ ঘুড়ি ও লাইটিং করে বানানো হচ্ছে ফানুস ঘুড়ি। ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজনে বিমোহিত এখন নাটোরবাসী। নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগর গ্রামের মমিন মোল্লা বলেন, ঘুড়ি উড়ানো আমার একটি শখ, নীল আকাশে ঘুড়ি উড়াতে আমার অনেক ভালোলাগে। ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজন ও মানুষের মধ্যে ইতিবাচক সারা দেখে নলডাঙ্গার শহীদ নজমুল হক সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ তোতা ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজনকে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে যান্ত্রিক জীবনে করোনার টেনশনে মানুষ আতঙ্কিত, তখন ঘুড়ি ওড়ানোর এমন প্রয়াসকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন তিনি। ঘুড়ি ওড়ানোর এমন দৃশ্য দেখে নলডাঙ্গা উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক মামুনুর রশীদ বলেছেন, একটা সময় ছিল যখন আমরা বিকাল হলেই বেরিয়ে পড়তাম ঘুড়ি ওড়াতে, যা বর্তমান সময়ে চোখে পড়ে না। তবে করোনাকালীন এমন সময়ে ঘুড়ি বানানো ও ওড়ানোর আয়োজনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি। পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, দেশের এমন পরিস্থিতে ঘুড়ি ওড়ানোর এই আয়োজন অনেকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে মানুষের মনে।

বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ। ঘুড়ি উড়ানো নিয়ে নলডাঙ্গা সাব-জোনাল অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, অনেক সময় ঘুড়ি বিদ্যুৎ লাইনের সঙ্গে আটকে যায় বা সুতো ছিঁড়ে ঘুড়ি সঞ্চালন লাইনের সঙ্গেই আটকে যেতে পারে। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সবার উচিত বৈদ্যুতিক লাইনের আশপাশে ঘুড়ি ওড়ানো পরিহার করা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর