মহামারী করোনাভাইরাসের প্রথম আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন খাতের তারকা হোটেল ব্যবসার ভবিষ্যৎ অজানা বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন- বিআইএইচএ সভাপতি এইচ এম হাকিম আলী। তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের প্রায় ৩০টি হোটেলে চিকিৎসকরা আছেন। এসব হোটেল কোনো রকম টিকে আছে। এর বাইরে সব হোটেলই খালি।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ হোটেলের কর্ণধার ও ইন্টারকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এইচ এম হাকিম আলী বলেন, এয়ারলাইনগুলো পুরোপুরি চালু না হলে পর্যটন খাতের কী হবে বুঝতে পারছি না। আসলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশে কেউ আসবেও না। আবার যাবেও না। ইউরোপের দেশগুলোও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তার ওপর নির্ভর করছে হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন খাতের ব্যবসা। দেশের পর্যটন খাতের এই অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সম্ভাবনাময় এবং দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন হোটেলসহ তারকা হোটেল খাতে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এ খাতে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ অচলাবস্থা চলতে থাকলে চলতি জুলাই মাসে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে চার হাজার কোটি টাকায়। এ খাত রক্ষায় অন্যান্য খাতের মতো সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা চেয়েছি। তিনি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এই অবদান দ্রুত দুই অঙ্কের দিকে বা ১০ শতাংশে উন্নীতকরণে সরকারের সহায়ক হিসেবে আমরা কাজ করছি। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে বেশির ভাগ হোটেলে অতিথির সংখ্যা নেমে এসেছে ২ থেকে ৩ শতাংশে। এটি স্মরণকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ করতে না পারায় এরই মধ্যে বেশ কিছু হোটেল তাদের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। অপ্রত্যাশিত এই আর্থিক সংকটে কাজ হারিয়েছেন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শুধু দুই থেকে পাঁচতারা মানের হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টেই কাজ হারিয়েছেন এক লাখ মানুষ। চলমান সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে পর্যটন খাতের এই নেতা বলেন, পোশাকশিল্পের মতো দেশের হোটেল তথা পর্যটনশিল্পকে বাঁচাতে আমরা চার দফা দাবি করছি। এ ছাড়া আগামী তিন বছরের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার সুদমুক্ত ঋণ চেয়েছি। করোনা সংকট কেটে গেলে বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের আহ্বান জানাই। এর সঙ্গে করোনাকালীন পরিষেবা বিল মওকুফসহ আগামী দুই বছর আয়কর মওকুফ করারও দাবি করছি।