বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি চট্টগ্রামে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি চট্টগ্রামে

বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে হাঁটুপানি। গতকাল তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রামে বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি একাকার হয়ে তলিয়ে যায় নিচু এলাকার সড়ক, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়। অভিযোগ ওঠেছে, প্রায় প্রতি বছরই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরের খাল, নালা-নর্দমা ও ড্রেন পরিষ্কার করে। কিন্তু এ বছর চসিক এ রুটিন কাজটি করেনি। ফলে নগরের খাল, নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো নানা বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে নালা-নর্দমা দিয়ে পানি সহজে প্রবাহিত হতে পারছে না। তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই চট্টগ্রাম নগরী তলিয়ে যায়।

এদিকে, চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৪৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৫০ সেলসিয়াস বেশি। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তাছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। 

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, ‘চট্টগ্রামে বেশির ভাগ জায়গায় অস্থায়ী দমকা কিংবা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’

চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করার কথা। এখন কাজগুলো তদারকি করছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোম ও মঙ্গলবারের টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে এসব এলাকার মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এলাকার কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমর পানি পর্যন্ত তলিয়ে যায়। বিশেষ করে নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, জিইসি মোড়, অক্সিজেন মোড়, নাসিরাবাদ, বাকলিয়া, চন্দনপুরা ডিসি রোড, রাহাত্তারপুল, পূর্ব বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, বড়পুল, ছোটপুল, সরাইপাড়া, গোসাইলডাঙ্গা, মা ও শিশু হাসপাতাল, হালিশহর, মধ্যম হালিশহর, পাথরঘাটা, আছাদগঞ্জ শুঁটকি পট্টি এবং রশিদ বিল্ডিং এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে অফিসগামীরা দুর্ভোগে পড়েন।

আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার কর্ণফুলী নদীতে প্রথম ভাটা শুরু হবে রাত ২টা ১৪ মিনিট। জোয়ারের উচ্চতা থাকবে ৪.৮২ মিটার। প্রথম জোয়ার শুরু হবে সকাল ৯টায়, পানির উচ্চতা থাকবে ০.৭৫ মিটার। দ্বিতীয় ভাটা শুরু হবে দুপুর ২টা ২৯ মিনিটে, পানির উচ্চতা থাকবে ৫.৭২ মিটার। দ্বিতীয় জোয়ার শুরু হবে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে, পানির উচ্চতা ০.৭৩ মিটার।

সর্বশেষ খবর