ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, ইতিমধ্যেই রোহিঙ্গাদের একটি দলকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। বলা যায়, তারা স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছে। সেটাকে কেন্দ্র করে বা সরকারের কার্যক্রম নিয়ে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর একটা অবস্থান ছিল। তবে সংস্থাটির অবস্থানকে ‘যুক্তিযুক্ত’ বলার সুযোগ নেই। এতে রোহিঙ্গাদের স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ভালো ব্যবস্থা করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা মনে করছে তাদের কাজ করতে কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। রোহিঙ্গাদের স্বার্থের বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে সংস্থাগুলো নিজেদের সামান্য প্রতিবন্ধকতাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে তাদের বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব সংস্থার নিজস্ব যে দৃষ্টিভঙ্গি সেটাই প্রকাশ পেয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শরণার্থীদের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়, ভাসানচরে তার থেকেও ভালো অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপত্তির কোনো কারণ দেখি না। এই অবস্থানকে তাদের নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য একটি কূটনৈতিক চাপ হিসেবে আমরা দেখছি। ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বার্থে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে সহযোগিতা করা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। জাতিসংঘের মূল ফোকাস হওয়া উচিত, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া। গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বৃহৎ শক্তিগুলো সামান্য অগ্রগতিও সাধন করতে পারেননি। আমরা জানি যে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের সংকটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করে বা বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো এক ধরনের জোট তৈরি করে যে রাষ্ট্র গণহত্যা আ ‘ইথনিক ক্লিনজিং’ করে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ তো আমরা দেখিইনি বরং কোনো কোনো রাষ্ট্র মিয়ানমারের পক্ষে ক্রমাগত ভোট দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত সাধারণ সভার যে থার্ড কমিটি আছে, সেখানে আমরা একটি ‘সফট রেজুলেশন’ দেখতে পেয়েছি। সেখানে ‘মিয়ানমার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’ এই প্রস্তাবে চীনের মতো দেশ বিরোধিতা করছে। অন্য দিকে আমরা দেখি যে, নিরাপত্তা পরিষদ কোনো প্রস্তাব পাস করতে পারেনি। মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো এবং সেখানে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা- এদিকে জাতিসংঘের মনোনিবেশ করা উচিত। অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে একই সঙ্গে দুই দিকে হাঁটতে হবে। এক. স্থানান্তর প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা। দুই. আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। সেটা একটা ইস্যু দিয়ে বিচার করলে চলবে না। তাদের আরও বেশি যুক্ত রাখার জন্য আপত্তির বিষয়গুলো নিয়েও ক্রমাগত আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। কেননা, বাংলাদেশের উন্নয়নে দাতাসংস্থাগুলোর ভূমিকা আছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে লড়াই এবং আঞ্চলিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। এবং পশ্চিমা দেশগুলো যারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলে, কিন্তু পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি, তাদের এতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে হবে। ভাসানচরে তাদের নিলেই বাংলাদেশ থেকে সমস্যাটি চলে যাবে না। ভাসানচরে স্থানান্তর ইস্যুতে যে প্রতিক্রিয়া এসেছে, তা অনভিপ্রেত। তাই এতে সরকার ও জনগণের যৌথ পদক্ষেপে তাদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জায়গাগুলো ধরিয়ে দিয়ে মিয়ানমারের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে।
শিরোনাম
- মোংলায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২
- সড়ক দুর্ঘটনায় জামায়াত নেতা নিহত
- বগুড়ায় ‘বিষাক্ত মদপানে’ একে একে পাঁচজনের মৃত্যু
- বগুড়ায় পিতার লাশ আটকে রেখে সম্পত্তি আদায়
- বিনিয়োগের পরিবেশ প্রয়োজন
- স্বনামধন্য ব্যবসায়ীদের কপালেও ঋণখেলাপির তিলক
- কোরআন ও সুন্নাহ প্রতিষ্ঠায় যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে
- ‘আমরা কারাগারে নয়, কসাইখানায় ছিলাম’
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৪ অক্টোবর)
- পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট, মাদাগাস্কারে মানুষের উল্লাস
- ‘কিছু দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল’
- অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
- এবার ভরিতে ৪৬১৮ টাকা বেড়েছে স্বর্ণের দাম
- ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা অস্পষ্ট: রাশিয়া
- বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রধান শিক্ষকের সংসার, মাঠ যেন গো-চারণভূমি
- পেকুয়ায় নৌবাহিনীর তিন দিনব্যাপী বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন শুরু
- পঞ্চগড়ে ‘ঘরে ঘরে জনে জনে’ কর্মসূচি নিয়ে নওশাদ জমির
- ন্যায্য পানি বণ্টন ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশের আহ্বান
- ২০২৫ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় তিন লাখ দক্ষিণ সুদানী: জাতিসংঘ
- ‘জামায়াত মায়া কান্না করে নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে চায়’
জাতিসংঘের অবস্থানকে যুক্তিযুক্ত বলার সুযোগ নেই
-ড. দেলোয়ার হোসেন
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান, ট্রাম্পের ভাষণ চলাকালে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে হট্টগোল
১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হামাসের ‘নতুন করে অস্ত্রসজ্জিত’ হওয়ার বিষয়ে মার্কিন অনুমোদন রয়েছে: ট্রাম্প
২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম