শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
পৌরসভা নির্বাচন

প্রার্থী হতে বাধা নেই

চাকরি ছাড়তে হবে না এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের, সরকারি চাকরি ছাড়লেই প্রার্থী হওয়া যাবে, পেনশনভুকরা হতে পারবেন প্রার্থী

গোলাম রাব্বানী

পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের চাকরি ছাড়তে হবে না। চাকরি বহাল রেখে তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলে প্রার্থী হতেও আরও তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে না। চাকরি ছেড়েই প্রার্থী হতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা; তবে ইস্তফা গৃহীত হতে হবে। এদিকে পেনশনভুকরাও হতে পারবেন প্রার্থী। অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকাবস্থায় প্রার্থী হতে নেই কোনো বাধা। নির্বাচন কমিশন মনে করে, পিআরএল চাকরির অংশ নয়, পিআরএল-এ থাকলে নির্বাচনে যোগ্য হবেন। অন্যদিকে দন্ডিতদের প্রার্থী হতে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। সাজা স্থগিত না হলে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। গত ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ সংক্রান্ত পরিপত্র-৬ জারি করেছে। পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতাসংক্রান্ত আইনের কয়েকটি ধারা স্পষ্ট করতে গিয়ে এ ব্যাখ্যা দিয়েছে কমিশন। তবে প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর এ পরিপত্র নিয়ে সমালোচনা করেছেন অনেকেই। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, অবশেষে ইসির ঘুম ভাঙল। প্রথম ধাপে প্রার্থী চূড়ান্ত করার সময় এসব বিষয় নিয়ে জটিলতা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তবে ইসির এই ব্যাখ্যায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে প্রার্থিতা যাচাই-বাছাইয়ে জটিলতা থাকবে না।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, পরিপত্র-৬ এ সাজার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়, কোনো প্রার্থী ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হলে এবং ওই দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল হলে এবং আপিল আদালত নিম্ন আদালতের রায় বা সাজা স্থগিত না করলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালত আপিল গ্রহণ করলেও তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন বা সংশ্লিষ্ট প্রার্থী জামিন পেলেও অযোগ্য হবেন অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট সাজা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। আর এমন দন্ডপ্রাপ্তরা মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।

স্বপদে থেকে নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়, শুধুমাত্র পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলররা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন। তবে অন্যকোনো স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্যরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ভোটারদের সমর্থনযুক্ত তালিকার বিষয়ে বলা হয়, এর আগে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন  এমন কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাইলে ভোটারদের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে নতুনদের ক্ষেত্রে ১০০ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দিতে হবে। পরিপত্রে আরও জানানো হয়, কোনো সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী নির্বাচনে অযোগ্য হবেন না। তবে পৌরসভার সঙ্গে সম্পৃক্ত চুক্তির ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া বাস্তবায়নাধীন/চলমান প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদাররা নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ঠিকাদারি হস্তান্তর করলে বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পরিবর্তন করলেও সংশ্লিষ্ট পৌরসভা নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। তবে অনেক পূর্বে কাজ করতেন কিন্তু বর্তমানে করেন না, এমন ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন না। এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে বলা হয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা স্বীয় পদে থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। ইস্তফার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইস্তফা গৃহীত হওয়ার সপক্ষে কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। সরকারি চাকরিজীবীদের বিষয়ে বলা হয়েছে- সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্তফা গৃহীত হওয়া সাপেক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার দরখাস্ত দাখিল করলেই তা ইস্তফা বলে বিবেচিত হবে না। পেনশনভুক্তরা নির্বাচনে যোগ্য হবেন। তবে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলে তিন বছর অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে না। পিআরএল চাকরির অংশ নয় বিধায় পিআরএল-এ থাকলে নির্বাচনে যোগ্য হবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর