বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম সিটি ভোটে টানটান উত্তেজনা

বিশেষ নিরাপত্তা-বলয়ে থাকবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি ভোটে টানটান উত্তেজনা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই বাড়ছে টানটান উত্তেজনা। প্রচারণায় উৎসবমুখর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। বাড়ছে সংঘাত-হানাহানি। যদিও নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের দাবি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (জনসংযোগ) শাহ মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে টহল ও মোবাইল টিম। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ব্লক রেইড।

বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘গণসংযোগ চলাকালে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছি। নির্বাচনী পরিবেশ দিন দিন সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’ তবে চসিক নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে এটা সত্য। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আশা করছি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, ‘চসিক নির্বাচনের ৭৩৫ ভোট কেন্দ্রকে তিন ভাগে বিভক্ত করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে দেড় শতাধিক কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এগুলোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা-বলয়।’

চসিক নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছে পরিবেশ। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সংঘাত। বাড়ছে উত্তেজনা। প্রার্থীদের ওপর হামলা, প্রচারণায় বাধা, পোস্টার ছেঁড়াসহ প্রতিদিনই নানা অভিযোগ জমা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনে। প্রচারণা চালাতে গিয়ে একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। তার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও করেছেন তিনি। একইভাবে হামলার অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম। প্রার্থীদের কেউ কেউ এরই মধ্যে নিজের নিরাপত্তার শঙ্কা এবং প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ওয়ার্ড পর্যায়ের কাউন্সিলর পদের অবস্থা আরও সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, কর্মীদের মধ্যে গোলাগুলি, হামলার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। নির্বাচনী সংঘাতে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর হামলার পাশাপাশি নানা অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে। নির্বাচনে ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৪টিতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলররা দলীয় মনোনয়ন পাননি। তাদের মধ্যে ১২ জনই রয়েছেন নির্বাচনী যুদ্ধে। ওই ওয়ার্ডগুলোতে মুখোমুখি অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলররা। এর জের ধরে তাদের মধ্যে প্রায়ই সংঘাত হচ্ছে। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মো. জান্নাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। তাই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এরই মধ্যে নিরাপত্তা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর