করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশের ৬৬২টি কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। সারা দেশের ৬৬২টি কেন্দ্রে দেওয়া হবে করোনার টিকা। এর মধ্যেই ৩৬টি জেলায় পৌঁছেছে টিকা। টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন এ পর্যন্ত ১২০০ জন। তবে এখনো টিকা নিতে সুরক্ষা অ্যাপসে নিবন্ধন করতে সমস্যায় পড়ছেন অনেকে।
গতকাল বিশ্ব এনটিডি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সুরক্ষা অ্যাপস ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা অনেক প্রশ্ন পেয়েছি। এটা গুগলে দেওয়া হয়েছে। এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। তারা সমাধানের চেষ্টা করছে। আপাতত ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩৬টি জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ঢাকায় কেন্দ্রীয় একটি হাসপাতালে টিকাদানের মধ্য দিয়ে সারা দেশে কর্মসূচি শুরু করবেন। ওই দিন সামনের সারির কর্মী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মীসহ ১৫০ জন টিকা নেবে। ঢাকার ৪৯টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা দেওয়া হবে। ৩৫৪টি টিম কাজ করবে। এটা কম বেশি হতে পারে। ৬ হাজার ৬৯০টি টিম কাজ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাই করোনা নির্মূলে টিকা পাবেন। কিন্তু এখনই টিকার নিবন্ধন সবার জন্য খোলা হয়নি। আপাতত সামনের সারির কর্মী ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ এখন টিকার নিবন্ধন নিতে পারবেন। আগামী মাসে টিকা পাবেন ৬০ লাখ মানুষ। অ্যাপটি মাত্র ২৭ জানুয়ারি চালু হয়েছে। আমাদেরও কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। যাবতীয় সমস্যা এই সপ্তাহের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা চলছে। কেন্দ্র সংখ্যা, বুথ সংখ্যা, টিকা সরবরাহ সবকিছু সঠিকভাবে করতে আমরা কাজ করছি। আপনাদের কাছেও আমরা এ সংক্রান্ত তথ্য চাই। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস কিংবা অন্য জটিলতা রয়েছে এমন রোগীরা টিকার নিবন্ধন করতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, তথ্য সংরক্ষণের জন্য নিবন্ধনকারী ব্যক্তির রোগ সম্পর্কে ফরমে তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন করছি। উদ্বোধনী দিনেই টিকা নিয়েছি। কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। আমি ভালো আছি, সুস্থ আছি। আপনারাও টিকা নিন।স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, করোনার টিকা দেওয়ার জন্য সরকার ১৯ শ্রেণির মানুষের অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করেছে। টিকা নিতে আগ্রহী ব্যক্তির বয়স যদি ৫৫ বছর বা তার বেশি হয়, তাহলে তিনি সুরক্ষা নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের পেশা অগ্রাধিকার তালিকায় থাকলেও এখনই নিবন্ধন করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির নাম স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে থাকতে হবে। এই নাম পাঠাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষ। দেশে গত বুধবার থেকে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সরকার বলছে, টিকা পেতে হলে প্রথম ধাপে অগ্রাধিকার তালিকার আগ্রহী ব্যক্তিদের নিবন্ধন করতে হবে ‘সুরক্ষা’ নামক ওয়েব পোর্টালে। বুধবারই ওয়েবসাইটটি চালু হয়। এরপর থেকে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা পেশার ব্যক্তিদের অনেকে এতে নিবন্ধনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু অনেকে নিবন্ধন করতে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং জন্মতারিখসহ ওই পাতার তথ্য দেওয়ার পর বলা হয়, ‘দুঃখিত, বর্তমানে শুধু মনোনীত সম্মুখসারির করোনা যোদ্ধা ও ৫৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের নিবন্ধন চলমান রয়েছে।’