শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

লোড পয়েন্ট হোয়াক্যং-হ্নীলা আনলোড সারা দেশে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

লোড পয়েন্ট হোয়াক্যং-হ্নীলা আনলোড সারা দেশে

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াক্যং এবং হ্নীলায় মানব দেহে ‘লোড’ হয় মরণ নেশা ইয়াবা। যা ‘আনলোড’ হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ইয়াবা ব্যবসার ‘লোড-আনলোড’ কৌশলের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহত হচ্ছে তরুণ-তরুণীদের। অনুসন্ধানে মিলেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভিতর যারা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তালিকা তৈরির পর ইয়াবা পাচার চক্রের হোতাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হবে।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়াবার মূল ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে দেশের  বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা পাচারের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণীদের। বিপুল অর্থ, স্মার্ট ফোনের টোপ দিয়ে ক্যারিয়ার হওয়ার প্রলুব্ধ করা হয় রোহিঙ্গাদের। তরুণদের এ কাজে জড়িত করার সহায়ক হিসেবে কাজ করে ক্যাম্পগুলোর প্রধান মাঝি কিংবা সাব মাঝিরা। নারীদের মূলত প্রলুব্ধ করেন তাদের স্বামীরা। মাদক ব্যবসায়ীদের টোপে কেউ পা দিলেও টার্গেটকে নিয়ে আসা হয় টেকনাফের হোয়াক্যং কিংবা হ্নীলা এলাকায়। এরপর বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ইয়াবা। নির্ধারিত জায়গায় ইয়াবার চালান পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে বাহকরা পান চালান ভেদে পাঁচ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রশাসনের দেওয়া পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে রোহিঙ্গাদের মাদক সংশ্লিষ্টতার ভয়ংকর তথ্য। ২০২০ সালে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে নানান অভিযোগে প্রায় সাড়ে ৮০০  মামলা দায়ের হয়। যার মধ্যে অর্ধেকেরই বেশি মামলা দায়ের হয় শুধুমাত্র মাদক সংশ্লিষ্ট কারণে। গত তিন বছরে চট্টগ্রাম বিভাগে বিভিন্ন অভিযানে ১৭৮ রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। যার মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় ২৫ রোহিঙ্গা নাগরিককে। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ১১১ জন। এছাড়া ২০১৯ সালে মাদকসহ গ্রেফতার করা হয় ১১ রোহিঙ্গা, ২০১৮ সালে গ্রেফতার করা হয় ২২ রোহিঙ্গা এবং ২০১৭ সালে গ্রেফতার করা হয় ১০ রোহিঙ্গাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর