রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জরিপ

মহামারীতে শহুরে নারীর কাজ বেড়েছে ১২৮ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে করোনাকালে শহর ও গ্রাম মিলিয়ে ৪৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ পরিবার থেকে অন্তত একজন কাজ হারিয়েছেন। আর কাজ হারিয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন শহরের ৭৩ দশমিক ৩ ভাগ মানুষ এবং গ্রামের ৯২ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ। এ ছাড়া মহামারীতে গ্রামীণ নারীর মতো শহুরের নারীদের রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ধোয়ামোছার কাজ বেড়েছে ১২৮ শতাংশ।

‘বাংলাদেশে ২০২০-এ করোনা চলাকালে সংসারের সেবাকাজের দ্রুত বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। এই জরিপ পরিচালনা করে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’। গতকাল ওয়েবিনারে এ তথ্য তুলে ধরেছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতার মধ্যে শতকরা ৭৬ জন বলেছেন, মহামারীর সময়ে তাদের পরিবারের আয় কমে গেছে। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা উপার্জনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৬৮ জনের আয় কমেছে। এর অর্থ, এই মানুষগুলো দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছেন। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা উপার্জনকারীদের শতকরা ৭৩ জনের আয়ও হ্রাস পেয়েছে। দেখা গেছে, কৃষিনির্ভর পরিবারগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলেও, যারা অকৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত সেই শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা বেশি খারাপ। জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়, শতকরা ৭৭ দশমিক ৭৮টি নারীপ্রধান পরিবার অর্থনৈতিক অনটনে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতের। নারীদের অনেকেই কাজ বা চাকরি হারিয়েছেন। পাশাপাশি বেড়েছে অস্বাভাবিক মাত্রায় ঘরের কাজের চাপ। বাংলাদেশে কাজে নিযুক্ত মানুষের মধ্যে শতকরা ৯১ দশমিক ৩ জন অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাদের শতকরা ৯৬ দশমিক ৭ জন নারী। জরিপের তথ্য বলছে, অভাবের কারণে শতকরা ৮৫ ভাগ কর্মজীবী নারী অমূল্যায়িত গৃহস্থালি কাজে অনেকটা সময় দিয়েছেন, যা ৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। শহরের নারী উত্তরদাতাদের কাছে গৃহস্থালি কাজের মধ্যে প্রথম দিকে আছে স্বামীর যত্ন করা। এরপর আছে সন্তান ও পরিবারের অন্যদের দেখাশোনা করা। করোনার আগে গৃহিনীদের মধ্যে শতকরা ৭১ দশমিক ৫ জন সাধারণত ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় অমূল্যায়িত গৃহস্থালি কাজে ব্যয় করতেন। করোনাকালে তাদের মধ্যে শতকরা ৩৭ দশমিক ৮ জনের কাজের সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে ঘরের কাজে পুরুষের অংশগ্রহণও বেড়েছে।

নারীর ঘরে কাজের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টার কাজ ৬/৭ বা ৮ ঘণ্টার কাজের তালিকায় পৌঁছে গেছে।

সর্বশেষ খবর