বুধবার, ১৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

নওগাঁয় মাশরুম চাষে সাফল্য

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় মাশরুম চাষে সাফল্য

নওগাঁর মান্দায় মাশরুম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সাইদুর রহমান। বর্তমানে তার ৫৮টি মাশরুম বীজ প্যাকেট (স্পন প্যাকেট) রয়েছে। মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চকরামাকান্ত দহপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমান। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন। গত বছর করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে বাড়ি চলে আসেন। এরপর ছেলে সাজিদ হোসেন আরাফাতের পরামর্শে মাশরুম চাষের বিষয়ে মনোযোগ দেন। কুরিয়ারের মাধ্যমে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে ৮ কেজি মাশরুম বীজ এনে কাজ শুরু করেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাড়ির দ্বিতীয় তলার ১২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের ঘরে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মাশরুম উৎপন্ন হয়। মাশরুম চাষি সাইদুর রাহমান বলেন, করোনায় চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছেলের কথায় সায় দিয়ে মাশরুম চাষ করি। অয়েস্টার জাতের মাশরুমের বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করা হয়। ঘরে ৫৮টি মাশরুম বীজ প্যাকেট আছে। এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৭ হাজার টাকার মাশরুম বিক্রি করেছি। যেখানে আড়াই হাজার টাকার মতো বিনিয়োগ হয়েছে। একেকটি স্পন প্যাকেট তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩০ টাকা। আর এমন স্পন প্যাকেট বিক্রি হয় ৪৫০ টাকায়। প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি করা হয়েছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। আশপাশের লোকজন এসে মাশরুম কিনে নিয়ে যান। যখন বেশি উৎপাদন হয় তখন স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করা হয়। এলাকায় মাশরুমের তেমন পরিচিতি না থাকায় মাইকিং ও লিফলেট ছাপিয়ে প্রচারণা করেছি। অনেক ডায়াবেটিস রোগী কিংবা সাধারণ মানুষ চাহিদা দেখিয়েছেন। প্রথমবার ভালো বীজ পাওয়া যায়নি। কিন্তু তারপরও ভালো লাভ হয়েছে। উৎপাদন করা খুব সহজ হলেও বিক্রি করতে অনেকটাই ঝামেলা। যদি বিক্রির নিশ্চয়তা থাকত, তাহলে কাজটি আরও সহজ হতো। তবে বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, মাশরুম চাষের জন্য দেড় থেকে দুই ইঞ্চি খড় সিদ্ধ করে হালকাভাবে শুকাতে হয়। যাতে চাপ দিলে পানি না ঝরে। এরপর খড়গুলো পলিথিনের প্যাকেটে রেখে তাতে মাশরুমের বীজ দিতে হবে।

প্যাকেটের মুখ বন্ধ করে কয়েকটা ছিদ্র করে দিতে হবে। এরপর ২০-২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অন্ধকার ঘরে রেখে দিতে হবে। দিনে ৮-১০ বার স্পনগুলোতে পানি দিতে হয়। সাধারণত ২৫-৩০ দিনের মধ্যে পলিথিনের গায়ে সূ² ছিদ্র দিয়ে সাদা আস্তরণ দেখা যাবে যাকে মাইসেলিয়াম (মাশরুমের ছাতা) বলে। এরপর মাশরুম খাওয়ার উপযোগী হয়। মান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার শায়লা শারমিন বলেন, সাইদুরের মাশরুমের প্রজেক্টটি দেখেছি। তার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমরা কিছু কিনেছিলাম। মাশরুম চাষে মার্কেটিং সবচেয়ে বড় বিষয়। মাশরুম চাষের ওপর একটা বরাদ্দ এসেছিল, সেটা এখন আর নেই। পরবর্তীতে কোনো বরাদ্দ এলে তার জন্য থাকবে।

সর্বশেষ খবর