শিরোনাম
সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

কোরিয়ান পানিকচু চাষে সাফল্য

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

কোরিয়ান পানিকচু চাষে সাফল্য

প্রথমবারের মতো খানসামায় উত্তর কোরিয়া থেকে আনা হাইব্রিড এন কে-ওয়ান জাতের পানিকচুর চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে আর্থিক উন্নয়নে অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন খানসামার ছিট আলোকডিহি গ্রামের চেয়ারম্যানপাড়ার কৃষক আলমগীর হোসেন। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের কারণে বর্তমানে পানিকচু বিক্রি ও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় সম্ভাবনার স্বপ্ন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, পানিকচু চাষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নজির স্থাপন করেছে খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী, বাসুলী, জয়গঞ্জ, গুলিয়াড়া, আঙ্গারপাড়া ও ভেড়ভেড়ী গ্রামের কচু চাষিরা। প্রায় চার যুগের বেশি সময় ধরে তারা স্থানীয় জাতের পানিকচু ও মুখিকচু চাষ করছেন। এদের অনেকে পরিবারের সবজির চাহিদা মিটিয়ে কচু বিক্রি করে স্বল্প সময়ে ভাগ্য বদলও করেছেন। এবারও ৩৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের পানিকচু, লতিরাজ ও মুখিকচুর চাষ করছেন চাষিরা। তবে স্থানীয় পানিকচুর বদলে কৃষক আলমগীর হোসেন এ বছর কোরিয়ান এন কে-ওয়ান জাতের কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ করছেন। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি পাশের উত্তরা ইপিজেড-এ একটি কোম্পানিতে কাজ করি। সেখানকার একজন কর্মকর্তা উত্তর কোরিয়া যাতায়াত করেন। আমি তার মাধ্যমে কোরিয়া থেকে উন্নত জাতের এ কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ করছি। উপসহকারী কৃষি অফিসার এম জে এইচ কামরুজ্জামানের সহযোগিতায় ৩৩ শতক জমিতে ২ হাজার ৮০০ চারা ক্রয় করতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। হালচাষ, জমি তৈরি, সার প্রয়োগ ও অন্যান্য খরচ হয় আরও ৩০ হাজার টাকা। নভেম্বর মাসে লাগানো এসব পানিকচু বিক্রির উপযোগী হয়ে আসছে। প্রতিটি কচুর উচ্চতা হয়েছে ১০-১২ ফুট আর ওজন হয়েছে ১৫-২০ কেজি। একটি পরিপূর্ণ কচুর ওজন হয় ৩৫-৪০ কেজি পর্যন্ত। এসব কচুর কান্ড, লতি আর শুকনো ডাটা উত্তর কোরিয়াতে রপ্তানি করার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে রপ্তানিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত চারা বিক্রি হয়েছে ৪০ হাজার টাকা, কচুর লতি ৩৮ হাজার টাকা এবং ফুল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিটি কচু ৩৫-৪০ টাকা করে দাম করেছে বলে তিনি জানান।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় জানান, এ কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, বি, সি, প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালশিয়াম ও আয়রন রয়েছে। স্থানীয় জাতের চেয়ে হাইব্রিড জাতের পানিকচুর ফলন হয় ভালো। এ জাতের কচুর প্রতিটি কাে র ওজন হয় ৩৫ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে অন্য চাষির মাঝে চারা সরবরাহ করেছি। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দেবীগঞ্জ ও বদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চারা বিক্রি হয়েছে। আশা করি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি উৎপাদিত কচু বাজারজাত করতে পারবেন এবং লাভবান হবেন।

সর্বশেষ খবর