রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

স্কিপিং রোপে লাফিয়ে রেকর্ড রাসেলের

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

স্কিপিং রোপে লাফিয়ে রেকর্ড রাসেলের

স্কিপিং বা দড়ি লাফে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠালেন ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান রাসেল ইসলাম। মাত্র ২১ বছর বয়সেই স্কিপিং রোপে (দড়ি লাফে) বিশ্ব রেকর্ড করলেন তিনি। তাকে এখন এক নজর দেখতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন ছুটে আসছেন।

রাসেল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের সিরজাপাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। তিনি শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত। জানা গেছে, স্কুলজীবন থেকেই রাসেলের ইচ্ছা ছিল স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করার। সে চিন্তা নিয়েই ২০১৭ সাল থেকে তিনি স্কিপিং রোপের চর্চা শুরু করেন। বাসার আশপাশে বিভিন্ন সড়কের ধারে যখন যেখানে সময় পেয়েছেন সেখানেই প্রতিনিয়ত স্কিপিং রোপের চর্চা করেছেন। অবশেষে নিজেকে এ খেলায় পরিপূর্ণ মনে হলে ২০১৯ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন রাসেল। স্কিপিং রোপের ওপর দুটি বিষয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ  করেছিলেন। একটি ৩০ সেকেন্ডের অন্যটি ১ মিনিটের ওপর। এক পায়ে ৩০ সেকেন্ড স্কিপিং রোপে ১৪৪ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল করেছেন ১৪৫ বার। আর ১ মিনিটে এক পায়ে ২৫৬ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল করেছেন ২৫৮ বার। এর মাধ্যমে সে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ে তুলেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাসেল অনলাইন থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদপত্র পান।

স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আজ রাসেলের কারণে দেশবাসী আমাদের গ্রামের নাম জানতে পারছেন। সকাল থেকে অনেকেই আসছেন তার বাসায়। রাস্তাঘাটে অনেকেই বলছেন, বিশ্ব রেকর্ড করেছেন রাসেল, তার বাসা কোনটা? এটা শুনতেই অনেক ভালো লাগছে। আমাদের গ্রামের সন্তান আজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

রাসেলের বাবা বজলুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলে একটি দড়ি নিয়ে লাফাত। তাকে বলেছিলাম এসব করে কী হবে। সে আমাকে বলত, আব্বা আমি একদিন এ খেলা দিয়েই তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করব। আজ সত্যিই সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তিনি বলেন, বাবা হয়ে আমি আমার সন্তানকে তেমন কোনো কিছু দিতে পারিনি। তবে সে আমাদের দিয়েছে। আজ সবার মুখে আমার ছেলের নাম। আমি শুধু আমার ছেলেকে সাহস দিয়েছিলাম। এই সাহস নিয়েই এগিয়ে গেছে আমার ছেলে।

স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করা রাসেল ইসলাম জানান, স্কিপিং রোপ আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল। ইন্টারনেটে স্কিপিং রোপের ওপর ভিডিও দেখতাম। স্কিপিং রোপে কতবারে বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে তা নজরে রাখতাম। ওই বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করার স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি প্রতিনিয়ত চর্চা করে যাই। পড়াশোনার পাশাপাশি যখন যেখানে সময় পেতাম সেখানেই চর্চা করে যেতাম।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, রাসেলকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সহযোগিতা করা হবে। পরবর্তীতে রাসেল যে কোনো স্থানে এ খেলায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

সর্বশেষ খবর