বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

মহাসড়কে তীব্র যানজট, দুর্ভোগ

প্রতিদিন ডেস্ক

মহাসড়কে তীব্র যানজট, দুর্ভোগ

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও মানিকগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে গতকাল ছিল তীব্র যানজট। কুমিল্লা প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মোল্লা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ ছিল মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার ও সিএনজি অটোরিকশার দখলে। চান্দিনা, বাগুর, নিমসার, মাধাইয়া, ময়নামতি, পদুয়ার বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মহাসড়কে অবাধে চলছে ওইসব যানবাহন। দূরপাল্লার যাত্রী বহনে মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার এবং স্থানীয় যাত্রী বহনে মারুতি ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের প্রতিযোগিতায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। কার আগে কে যাত্রী উঠাবেন তার প্রতিযোগিতাও চলছে। প্রতিটি স্টেশন এলাকায় বেড়েছে যাত্রীর সংখ্যাও।

বাগুর বাস স্টেশনে মাইক্রোবাসে যাত্রী উঠাচ্ছিলেন চালকরা। এ সময় অন্যান্য সময়ের মতো ঢাকা-যাত্রাবাড়ী-সাইনবোর্ড ও চিটাগংরোড ৮০০ বলে ডাকাডাকি করছেন চালকরা। ২/৪ জন যাত্রী দাম কষাকষি করলেও অধিকাংশরাই হুমড়ি খেয়ে গাড়িতে উঠছেন।

আবার গাড়ির সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্থানীয় ‘চেকার’ নামীয় চাঁদা আদায়কারীরা। ৮০০ টাকা ভাড়া দরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সপরিবারে মাইক্রোবাসে উঠেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বাসিন্দা দিদারুল আলম। তিনি জানান, শনিবার বিকালে বাস চালু করার পর পরিবার নিয়ে বাড়িতে এসেছিলাম। কর্মের তাগিদে আজ ঢাকায় ফিরছি। গাড়ি পাইলাম এটাই বড় কথা। ভাড়ার হিসাব করলে যাব কীভাবে? মাইক্রোবাস চালক আবদুল মালেক জানান, ‘রোডে অনেক যাত্রী। তাই গাড়ি লইয়া বাহির হইছি।’

হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) জিয়াউল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যখন টহলে থাকি তখন স্টেশন ফাঁকা হয়ে যায়। আমরা চলে আসলেই আবারও ঘিরে বসে। মানবিক কারণে মামলা দিচ্ছি না। চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করতে।’

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট স্বাভাবিক, মহাসড়কে ভোগান্তি : মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি কাবুল খান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট স্বাভাবিক হয়েছে। তবে মহাসড়কে যাত্রীবাহী পরিবহন না থাকায় ঢাকামুখী যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে। তবে সড়ক-মহাসড়কে আগের কদিনের চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কম। গতকালও রাস্তায় কর্মস্থলমুখী লোকজনকে খোলা ট্রাকে করে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া মোটরসাইকেল, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানে করেও তারা গন্তব্যে গিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত মহা-ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের কোনো ধরনের চাপ নেই। তবে সকালের দিকে দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহনের সঙ্গে ঢাকাগামী লোকজন এসেছেন। এই নৌরুটে ফেরির কোনো সংকট নেই। প্রয়োজনীয় ফেরি দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে ফেরিতেই পার হচ্ছে যাত্রীরা : জেলা প্রতিনিধি বেলাল রিজভী জানান, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ফেরিতে পার হচ্ছে। গেল কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল সকাল থেকে রাজধানীমুখী যাত্রীর চাপ তেমন নেই। তবে ফেরিতেই জরুরি যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীরাও পার হচ্ছেন। একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তারা ফেরির সঙ্গে লঞ্চ চলাচল চালু রাখার দাবি জানান। এদিকে গত তিন দিন বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রীদের চাপ ও নদীর স্রোতে ফেরি পারাপারে অধিক সময় লাগার কারণে বাংলাবাজার ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ রয়েছে। ঘাটে প্রায় দুই শতাধিক ট্রাক রয়েছে বলে জানান বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট কর্তৃপক্ষ। তারা আরও জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্রোতের তীব্রতা বাড়ায় ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে। দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এখনো ঘাটে আসছেন মানুষ। বর্তমানে ঘাটে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। এতে যাত্রীরা সহজেই ঘাটে এসে পদ্মা পারি দিচ্ছে। জমিরউদ্দীন নামে ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি। গোপালগঞ্জ থেকে এসেছি। জরুরি কাজে ঢাকা যাচ্ছি। বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন বলেন, সকাল থেকে ১০টি ফেরি চলছে। তবে রো রো ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী পরিবহন, পচনশীল দ্রব্যের ট্রাক পার করছি। তবে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর