বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ ১১৯ স্বতন্ত্র ৩৬

প্রথম ধাপের স্থগিত ১৫৬ ইউপির ফল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম ধাপের স্থগিত ১৬০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গড়ে ভোট পড়েছে ৬৯.৩৪ শতাংশ। গত সোমবার প্রথম ধাপের স্থগিত এ নির্বাচন হয়। তবে ১৬০ ইউপির মধ্যে ১৫৬টি ইউপির ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনের কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও জাল ভোট দানের ঘটনাও ঘটেছে। অনিয়মের কারণে চার ইউপির ফলাফল স্থগিত রয়েছে। এ ধাপের ১৫৬ ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৪৩ জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ৭৬ জন। সব মিলে ১৫৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হয়েছেন ১১৯ জন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান হয়েছেন ৩৬ জন এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তবে ফলাফল স্থগিত থাকা চার ইউপিতে একটিতে আওয়ামী লীগ ও তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। প্রথম ধাপের স্থগিত ইউপি নির্বাচনের এই ফলাফলের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান।

দলভিত্তিক এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীরাই ছিল মূল লড়াইয়ে। বিএনপি এ ভোটে অংশ না নিলেও দলটির যারা অংশ নিয়েছে তাদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়েছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দলের প্রার্থী ছিল।

নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৬০ ইউপিতে মোট ভোটার ছিল ২০৯৩১১৭ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৪৫১৩০০ জন। সে হিসাবে চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৬৯.৩৪ শতাংশ। এবারে ১৬০ ইউপির মধ্যে ৮ ইউপিতে ইভিএম ভোট গ্রহণ হয়েছে। আর ইভিএমে সর্বোচ্চ ৭৭.৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার গংগারামপুর ইউপিতে। আর সবনিম্ন ৫৬.১৬ শতাংশ ভোট পড়েছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউপিতে। ইভিএমে মোট ভোট পড়েছে ৬৯.৭৮ শতাংশ। এদিকে ব্যালট পেপারে সর্বোচ্চ ৮৪.৪৮ শতাংশ ভোট পড়েছে খুলনার দাকোপ উপজেলার দাকোপ ইউপিতে। আর সর্বনিম্ন ৪৩.৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে চট্টগ্রামের স›দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর ইউপিতে। ব্যালট পেপারে মোট ভোট পড়েছে ৬৯.৩০ শতাংশ। এ নির্বাচনের প্রাণহানি ঘটেছে তিনজনের। এর মধ্যে ভোটের দিন দুজন এবং ভোটের আগের রাতে একজন নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হন। এর আগে গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ২০৪ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে গড়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ছাড়া ২০৪ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৮ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ভোটে নির্বাচিত হন ১২০ জন নৌকা প্রার্থী। সব মিলিয়ে এই ভোটে ১৪৮ জন চেয়ারম্যান বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের। স্বতন্ত্র প্রার্থী জেতেন ৪৯ জন। জাতীয় পার্টির তিনজন, জাতীয় পার্টি-জেপি’র তিনজন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন প্রার্থী। ভোটে নির্বাচনকালীন ও নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় অন্তত তিনজন মারা যান।

২০১৬ সালের চিত্র : পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে প্রথম দলীয়ভাবে ইউপি ভোট হয়। তাতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপাসহ অনেক দল অংশ নেয়। সেবার ছয় ধাপের ভোট হয়। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ৭৬ শতাংশ, চতুর্থ ধাপে ৭৭ শতাংশ, পঞ্চম ধাপে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ ও ষষ্ঠ ধাপে ৭৬ শতাংশ ভোট পড়ে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৪৭ দশমিক ২৭ শতাংশ, বিএনপি ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক জয় পায় ২৬৭০ ইউপিতে, বিএনপি ৩৭২ ইউপিতে আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৮৮০ ইউপিতে। বাকিগুলোয় রয়েছেন জাতীয় পার্টি, জাসদ, জেপি ও কয়েকটি দলের প্রার্থী।

সর্বশেষ খবর