বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা

প্রশ্ন ফাঁস চক্রের পাঁচজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের তিনজনই সরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা।

ডিবি জানায়, পরপর ব্যাংকের চারটি নিয়োগ পরীক্ষায়ই প্রশ্ন ফাঁস করেছে এ চক্র। প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংক নিয়োগে প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনে দায়িত্ব দেওয়া হয় আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইসিটি বিভাগকে। পরে তাদের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা প্রশ্ন ফাঁস করেন। চক্রটি এ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

গতকাল বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। এর আগে ডিবি তেজগাঁও বিভাগ গত ৬ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- চক্রের হোতা আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল, জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার শামসুল হক শ্যামল, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন, পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন ও চাকরিপ্রার্থী স্বপন। সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার বলেন, পরীক্ষার আগে চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বাড্ডা, ভাটারা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, রূপনগর, মিরপুর, মাতুয়াইল, শেওড়াপাড়া, শেরেবাংলা নগর, পল্লবী এলাকায় বুথ বসায়। এসব বুথে পরীক্ষার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা আগে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানো হয়। চক্রের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক বুথ থেকে ২০ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থীকে উত্তর মুখস্থ করিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মোক্তারুজ্জামান ও শ্যামল জানিয়েছেন, এর আগে আরও তিনটি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁস করেছেন তারা। পরীক্ষার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা আগেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে প্রায় ২ হাজার পরীক্ষার্থীর মাঝে তারা প্রশ্ন ও উত্তর সরবরাহ করেছেন। নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। এমসিকিউ পরীক্ষার আগে ২০ শতাংশ, লিখিত পরীক্ষার আগে আরও ২০ শতাংশ ও নিয়োগ পাওয়ার পর বাকি ৬০ শতাংশ টাকা পরিশোধের শর্তে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি হতো তাদের। চক্রটি এ পর্যন্ত ৬০ কোটি টাকা হাতিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ চক্রে আরও যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর