শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বন্দরে পণ্যজট, উদ্বিগ্ন পোশাক মালিকরা

নভেম্বরে ৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

রুহুল আমিন রাসেল

বন্দরে পণ্যজট, উদ্বিগ্ন পোশাক মালিকরা

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে চার দিনের পরিবহন ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে বিশাল পণ্যজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন দেশে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকরা। তারা বলেছেন- বন্দর ইয়ার্ডে হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বন্দরে পণ্যজটের কারণে চলতি নভেম্বরে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্র ব্যাহত হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সহসভাপতি শহিদুল আজিম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। যা ১০ শতাংশের বেশি যৌক্তিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। জাতীয় স্বার্থে বন্দর সংশ্লিষ্ট পরিবহন সেক্টরসহ বিভিন্ন সংগঠনের ধর্মঘটের নামে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত করার অপচেষ্টা বন্ধ করা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ পণ্য জট সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে জানিয়েছে- গত ৫ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনের পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ থাকায় বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে প্রায় ৪০ হাজার টিউজ অবস্থান করছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা ৪৯ হাজার ১৮ টিউজ। এর ফলে বন্দর ইয়ার্ডে হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বিজিএমইএ জানায়, ধর্মঘটের চার দিনে প্রায় ১২ হাজার টিউজ আমদানি পণ্য চালান খালাস এবং প্রায় ৫ হাজার টিউজ রপ্তানিবাহী পণ্য চালান জাহাজীকরণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো বা আইসিডিতে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ধারণ ক্ষমতা ১০ হাজার টিউজের বিপরীতে গত ৭ নভেম্বরে ৯৭ হাজার টিউজ কনটেইনার অবস্থান করছে। বিজিএমইএ জানিয়েছে, হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরসমূহের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ফলে ক্রেতার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে গত ৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৪০০ টিউজ রপ্তানিবাহী কনটেইনার জাহাজীকরণ করা সম্ভব হয়নি। আমদানি হওয়া পণ্য চালানের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহের এয়ারশিপমেন্ট ডিসকাউন্টসহ রপ্তানি আদেশ বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও আমদানি হওয়া চালান খালাস করতে না পারার কারণে উৎপাদনে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চলতি নভেম্বরে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর