মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছু সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। তার পরও পরিচয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা জমিদারবাড়িটি। এখনো অবিকল সিংহদ্বার। পুরনো প্রাচীর থেকে খসে গেছে ইটের সুরকি। জমিদারবাড়ির জৌলুস না থাকলেও প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই বাড়িটি একনজর দেখে নেন পথচারীরা। জমিদারবাড়িটি রক্ষায় সরকারিভাবে নেওয়া হয়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। জানা যায়, জেলার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা বন্দর এলাকায় ৩৩ বিঘা জমির ওপরে এ প্রাচীন প্রাসাদ। পযুরোতন আর বিশাল সব গাছে ভরা জমিদারবাড়ির আশপাশ। ছায়া ঘেরা। পাখির অভয়ারণ্য যেন। স্থানীয়দের কাছে এটি মাদলা জমিদারবাড়ি বলে এখনো পরিচিত। জমিদারবাড়ির গোড়াপত্তন করেন জমিদার বিশ্বনাথ সরকার। প্রায় ৪০০ বছর আগে মোগল আমলে জমিদার বিশ্বনাথ সরকার বগুড়ার নবাবের কাছ থেকে এই জমিদারি প্রাপ্ত হন। বাড়ির চতুর্দিকে উঁচু প্রাচীরের বেষ্টনী এবং মোট সাতটি ফটকে নিরাপত্তায় পাইক-পেয়াদারা দায়িত্ব পালন করতেন। মাদলা হাট থেকে পূর্ব দিকে সামান্য এগিয়ে মাদলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে জমিদারবাড়ির মূল রাস্তা। দুই ধারে প্রাচীন বৃক্ষের ভিতর দিয়ে পাকা রাস্তা নিয়ে যাবে প্রধান ফটকে। তারপর ঘাট বাঁধানো বিরাট পুকুর। বাড়ির দেওয়াল দেখলেই বলা যাবে এটি একটি পুরনো প্রাসাদ। এতটাই পুরনো যে, দেখে মনে হবে এই বুঝি খসে পড়বে দেওয়াল। দেওয়াল আর সিংহদ্বার দেখলে মনে হবে কয়েক শ বছর আগের কোনো প্রভাবশালীর বসতস্থল ছিল এটি। জমিদারবাড়ির বউ সরকারি চাঁচাইতারা-মাদলা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জনা রানী ঘোষ বলেন, ১৯৭১ সালে তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকা পুরো জমিদারবাড়ির ধনসম্পদ ব্যাপক হারে লুট করে নেয় দুর্বৃত্তরা। গয়নাপাতি- আসবাবপত্র থেকে শুরু করে জমিদারবাড়ির দরজা-জানালা পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায় তারা। পরবর্তীতে জমিদারবাড়ির কিছু নিদর্শন টেবিল, চেয়ার ও আসবাবপত্র স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ইতিহাসচর্চায় সরকারি চাঁচাইতারা-মাদলা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের জায়গাও জমিদারবাড়ি থেকে দান করা। জমিদারবাড়ির প্রাচীন নিদর্শন দেখতে বিভিন্ন জায়গার মানুষ আসেন। বর্তমানে জমিদারি না থাকলেও জমিদারের বংশধররা প্রাচীন নিদর্শনটি টিকিয়ে রেখেছেন। সরকারি কমরউদ্দিন ইসলামিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আওরঙ্গজেব বলেন, ইংরেজ শাসনামলে লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালে জায়গিরদারি প্রথা বিলুপ্ত করে জমিদারি প্রথা চালু করেন। উপমহাদেশকে আরও সহজভাবে শাসন করার জন্য তারা হাতিয়ার হিসেবে একে ব্যবহার করতেন। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় এ দেশে শতাধিক জমিদার রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্রিটিশদের কাছ থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। জমিদাররা শাসনকার্য পরিচালনা করতে প্রাসাদ তৈরি করে সেখানে বিচার কাজ পরিচালনা ও বসবাস করতেন। সেটাই জমিদারবাড়ি নামে পরিচিতি পায়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক নাহিদ সুলতানা জানান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ১০০ বছরের আগের ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি গেজেট প্রকাশের জন্য সংরক্ষণ করে। মাদলা জমিদারের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে তথ্য নেই। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে বাড়িটি পরিদর্শন করা হবে।
শিরোনাম
- ওষুধের আগ্রাসী বিপণনে ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন
- রোনালদোকে ছাড়াই আল-নাসরের গোল উৎসব
- আজ ঢাকার বাতাসের মান কেমন?
- অস্ট্রেলিয়া সিরিজে নেই স্যান্টনার, দায়িত্বে ব্রেসওয়েল
- নতুন অ্যালবামে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রে যাবে অর্থহীন
- শেষ মুহূর্তের নাটকীয় গোলে অ্যাতলেটিকোকে হারাল লিভারপুল
- কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন
- রাজধানীতে বহুতল ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বৃদ্ধ নিহত
- রাজধানী ঢাকায় আজ যেসব কর্মসূচি
- যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে ৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
- আমিরাতকে হারিয়ে শেষ চারে ভারতের সঙ্গী পাকিস্তান
- গাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের
- গাজাবাসীকে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের নিন্দায় পোপ
- স্বর্ণের দাম কমেছে
- ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
- ছাত্র সংসদ আর জাতীয় নির্বাচন এক নয় : টুকু
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করলো কলম্বিয়া
- রেমিট্যান্স প্রবাহে ২৮.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
- আবারও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
মাদলা জমিদারবাড়ির কথা
আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর