বুধবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
দুদক কমিশনার বললেন

দুর্নীতি বন্ধ করতে পারিনি, তবে ভয় দেখাতে পেরেছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেছেন, আমরা দেশ থেকে দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করতে পারিনি। তবে দুর্নীতিবাজদের ভয় দেখাতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে দেশে দুর্নীতির বিস্তার না ঘটে। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচার দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

জহুরুল হক বলেন, কক্সবাজারে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই উন্নয়ন প্রকল্পে যাতে কোনো দুর্নীতি না হয়, সেজন্য আমরা সজাগ আছি। কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলাকে নিয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কক্সবাজার যাত্রা শুরু করেছে। ২ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কক্সবাজারের উদ্বোধন করা হয়। আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের আরও ১৪টি জেলায় দুদকের জেলা কার্যালয় চালু করা হবে। এগুলো হলো-নারায়ণগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ), গাজীপুর (গাজীপুর ও নরসিংদী), মাদারীপুর (মাদারীপুর ও শরীয়তপুর), গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর (জামালপুর ও শেরপুর), নওগাঁ (নওগাঁ ও জয়পুরহাট), কুড়িগ্রাম (কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট), চাঁদপুর (চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর), বাগেরহাট (বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা), ঝিনাইদহ (ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা) ও পিরোজপুর (পিরোজপুর ও ঝালকাঠি) সমন্বিত জেলা কার্যালয়। চলমান ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে এই ১৪টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়। এতে করে মোট ৩৬ জেলায় সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে দুদক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিসর বিস্তারের ফলে দুর্নীতিবাজদের ধরা এবং আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এতে করে সাধারণ জনগণ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দূরত্ব কমে আসবে, দুর্নীতির অভিযোগ সহজে আমাদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত ও জোরদার হবে। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের পরিসর বিস্তার করছে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আমলে ২০০৯ সালে উচ্চ আদালতে স্থগিত মামলার সংখ্যা ছিল ২৯৭টি। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০৪টি। পরে ২০২০ সালে এই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২০২টিতে। এ ছাড়া ব্যুরোর আমলের বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪৫১টি এবং চলমান মামলার সংখ্যা ২৪৯টি। এর মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ১০ জনের, আর ১১ জন খালাস পেয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন হওয়ার পর ২০২০ সালে বিচারাধীন মামলা ছিল মোট ২ হাজার ৯৩১টি। ২০০৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭৮০টি। ২০২০ সালে চলমান মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৬৩১, উচ্চ আদালতে স্থগিত মামলার সংখ্যা ২৩৪টি। ২০০৯ সালে স্থগিত মামলার সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৯টি। পরিসংখ্যান বলছে, ১১ বছরে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৫৫টি। সাজা পেয়েছেন ১১১ জন এবং খালাস পেয়েছেন ৪৪ জন। ফলে প্রতি বছর শুধু মামলার পাহাড় জমছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর