শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ওমিক্রনে ৮২ শতাংশ রোগী

করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৪১, আক্রান্ত ৭ হাজার ২৬৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওমিক্রনে ৮২ শতাংশ রোগী

দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ২৬৪ জন। এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে বলা হয়েছে, এখানে চিকিৎসা নেওয়া ৮২ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আর বাকি ১৮ শতাংশ রোগী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। বিএসএমএমইউর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল হাসপাতালে যারা গেছেন তাদের ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। গতকাল বিএসএমএমইউয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গত ৯ জানুয়ারি থেকে এ মাসের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বমোট ভর্তি রোগী এবং বহির্বিভাগে আসা রোগীদের ৮২ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত এবং ১৮ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত পেয়েছি। এই সময়ে ওমিক্রনের তিনটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। সেগুলো হলো ইঅ.১, ইঅ.১.১, ইঅ.২। এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাষ্যমতে ইঅ.২ বেশি সংক্রামক।

জেনেটিক্স  অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু বলেন, আন্তর্জাতিক সিকোয়েন্সিং ডাটাবেজ জিন ব্যাংকে বিএসএমএমইউর ৯৩৭টি ভাইরাল জিনোম জমা দেওয়া হয়েছে। জিনোমিক ডাটাবেজে বিএসএমএমইউর এই গবেষণা ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক অবদানের একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।

৪১ মৃত্যু, আক্রান্ত ৭ হাজার ২৬৪ : করোনা আক্রান্তের পরিমাণ আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। যা আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। এই সময় দেশে করোনার সংক্রমণে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে করোনায় মারা গেলেন ৩৫০ জন। ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ৭ হাজার ২৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত সাত দিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নমুখী। ফলে ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ৮৬৭ জনের নমুনায় দেখা গেছে, পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার নিয়মিতভাবে কমছে। সাত দিন ধরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে রয়েছে। আগের দিন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ হাজার ১৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৩৩ জনের।  সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন ও নারী ১৪ জন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ জন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রামে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫, খুলনা ও রংপুরে ৩ এবং সিলেটে দুজন মারা যান। ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে কেউ মারা যাননি। দেশে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে রোগী বাড়তে শুরু করে। ৬ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। এর দুই সপ্তাহের মাথায় ২০ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা ১০ হাজারের ওপরেই ছিল। সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৭৪৪ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৪৬ জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর