শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু এ মাসেই

৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে’র কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের মার্চে

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু এ মাসেই

সুন্দরবনে বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহে চলতি এপ্রিলে ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে’র কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় বাঘ গণনার জন্য আবাসন লঞ্চ সাপোর্ট বোট ভাড়া, ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের জন্য ২০০ বিশেষ ক্যাটাগরির ক্যামেরা সংগ্রহ, ব্যাটারি, এসডি কার্ড কেনা, জরিপ দলের সব সদস্যকে প্রশিক্ষণ প্রদান ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে। এ ছাড়া বাঘের শিকার প্রাণী হরিণ, বন্যশূকর ইত্যাদি প্রাণীর জরিপ, প্রজনন সুবিধায় সুন্দরবনের বাঘ স্থানান্তর, অন্তত দুটি বাঘে স্যাটেলাইট কলার স্থাপন মনিটরিং ও বাঘের পরজীবীর সংক্রমণ নির্ণয় করা হবে।

গতকাল খুলনায় বন অধিদফতরের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, বন কর্মকর্তা এম এ হাসান।

জানা যায়, ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৫ সালের মার্চে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ  হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২৩ মার্চ প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। বন কর্মকর্তারা জানান, বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন প্রায় প্রতি বছর আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুষ্ক মৌসুমে সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি থাকে সেখানে দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। সুন্দরবনে আগুন লাগলে যাতে তৎক্ষণাৎ নেভানো যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ, পাইপ ও ড্রোন কেনা হবে। সুন্দরবনে কয়েকটি স্থানে বাঘের অবস্থান তুলনামূলক কম। ফলে বংশ বিস্তারের জন্য পরীক্ষামূলক দুটি বাঘকে বনের অন্য অংশে স্থানান্তর করা হবে। নদী ও খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বাঘ গ্রামে প্রবেশ করে জানমালের ক্ষতি করে। প্রকল্পে ৬০ কিলোমিটার অংশে নাইলনের ফেন্সিং নির্মাণ করে বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। জানা যায়, এর আগে ২০১৮ সালের জরিপ অনুয়ায়ী বাংলাদেশে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি, যা ২০১৫ সালে ছিল ১০৬টি। সুন্দরবনে ২০০৭ সালে সিডর, ২০০৯ সালে আইলা ও ২০২১ সালে ইয়াসের মতো বড় বড় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বনের সমস্ত এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়, তখন বনের বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণী আশ্রয়ের জন্য লোকালয়ে প্রবেশ করে। বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণী ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়ের জন্য সুন্দরবনে ১২টি মাটির কিল্লা স্থাপন করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর