বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে লাগাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদেশ সফরে যেতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অহেতুক ব্যয় কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বেড়ে গেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেগুলো আপনারা দেখছেন, এগুলো আগের অনুমোদন নেওয়া। সেসব ক্ষেত্রে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এখন থেকে এটা পরিষ্কারভাবে প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, যদি কোনো প্রয়োজন না থাকে তাহলে বিদেশ সফর আর নয়। যদি কোনো বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে তারা যাবেন, অন্যথায় কেউ যাবেন না। এটা কমানো হবে। প্রকল্প বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব প্রকল্প এখন না করে ছয় মাস পর করলে কোনো সমস্যা বা ক্ষতি হবে না, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, জিডিপিতে ক্ষতি হবে না- আমরা সেগুলো বাতিল না করে সময় পিছিয়েছি। জিডিপির হিসাব নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সংশয় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা যেভাবে জিডিপির হিসাব করি একইভাবে হিসাবটি করছি। আমরা কোনো কোম্পানিও যুক্ত করিনি, যেভাবে হিসাব করতাম সেখানেও পরিবর্তন আনিনি। আমি মনে করি আমরা ঠিক আছি। আমরা যে তথ্য দিয়েছি সেগুলো দেশের মানুষের জন্য।

 তিনি বলেন, আমরা তো ভয় পাই না। আমরা চাই আপনারা পরামর্শ দেবেন। এ পর্যন্ত আমরা যা বলেছি, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকসহ অন্য কেউ তো আপত্তি করেনি। তারা আমাদের সঙ্গে একমত, তা দেখলেই বোঝা যায়। চারদিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী ও বেগবান। ডলার সংকটে পড়ার আগেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে এবং প্রকল্পটি এখনই বাস্তবায়ন জরুরি নয়, সেসব প্রকল্প ছয় মাস বা আরও পরে বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ এবং এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মন্দা পরিস্থিতির পূর্বাভাস ছাড়াও রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বাড়তে থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার সন্তোষজনক রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। এই সময় অহেতুক ব্যয় করতে চাচ্ছে না সরকার। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ে সরকার খুবই সতর্ক রয়েছে। এ জন্য বিলাসপণ্যের আমদানিও যাতে কম হয়, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলাসপণ্যে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে লাগাম টানার ইঙ্গিত আছে। সরকার কোনো কারণে শংকিত কি না। জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি সহজ। সময় যখন কঠিন, সিদ্ধান্তও কঠিন নিতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। বিশ্বের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যতদিন বহির্বিশ্বে অস্থিরতা থাকবে ততদিন এ ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে কঠিন মানে এমন নয় যে, সবকিছু বন্ধ করে ফেলা হবে। বিলাসপণ্য পরে কেনা যাবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর