ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে। কয়েক শ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে নেত্রকোনায় গুমাই নদীর বাঁধ ভেঙে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সিলেট : উজানে ভারতের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় গতকালও সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন জনপদ। পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গোয়াইনঘাট উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সালুটিকর-গোয়াইনঘাট ২৪ কিলোমিটার সড়কের অন্তত ১৫ কিলোমিটার তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলারও প্রায় ৭০ ভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। উপজেলা সদরের সব অফিসে পানি উঠে যাওয়ায় দাফতরিক কাজে সংশ্লিষ্টদের বেগ পেতে হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি আরও বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক তলিয়ে না যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। অন্য সব আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, উপজেলার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বেসরকারি মতে, এই সংখ্যা দ্বিগুণ। বন্যার্তদের জন্য সরকারিভাবে ২০ মেট্রিক টন চাল ও প্যাকেটজাত শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় ৫৪টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সারি ও বড়গাঙের পানি বেড়েছে।
বিশ্বনাথ (সিলেট) : পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে উপজেলার লামাকাজি ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লামাকাজির মির্জারগাঁও, মাহতাবপুর, মাধবপুর, শাহপুর, সাবেহনগর, শাখারীকোনা, মাখরগাঁও, আকিলপুর, রসুলপুর, হাজারীগাঁও, তিলকপুুর, সৎপুর ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর, চরগাঁও, তেঘরী, মুছেধর, তবলপুর, রহিমপুর, এনায়েতপুর, অষ্টগ্রাম, মাইজলামাল, হোসেনপুর, কিশোরপুর, ইসলামপুর, রঘুপুর ও বন্ধুয়া এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।
সুনামগঞ্জ : এক রাতের ভারী বর্ষণে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া, উকিলপাড়া, ষোলঘর ও নবীনগর এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে পানি শহরে ঢুকছে।
জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার বিভিন্ন সড়কের অংশবিশেষ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
নেত্রকোনা : পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার গুমাইখালি নদীর পাঠান বাড়ি নামক বাঁধের একটি অংশ ভেঙে আশপাশের কয়েকটি বিলে পানি ঢুকে শতাধিক হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। তবে নেত্রকোনার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান জানান, বিভিন্ন বিলে ৪৮০ হেক্টর ধান কর্তন বাকি রয়েছে। এই পানিতে সমস্যা হবে না।