বুধবার, ১ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
মানবতাবিরোধী অপরাধ

নওগাঁর তিন আসামির ফাঁসির রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নওগাঁর তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রেজাউল করিম মন্টু, মো. নজরুল ইসলাম ও মো. শহিদ মণ্ডল। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তাদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তিনজনের মধ্যে মন্টু ও শহিদ মণ্ডল কারাবন্দি রয়েছেন। আসামি নজরুল ইসলাম পলাতক। ২৬ এপ্রিল এ তিনজনের বিষয়ে শুনানি শেষে সিএভি রাখা হয়েছিল। তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি মো. রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। বাকিরাও জামায়াতের সমর্থক বলে জানানো হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা নওগাঁর (সাবেক রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমা) বদলগাছী থানায় অপরাধ সংঘটন করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল ও মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করেন। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বেলা আনুমানিক দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করেন। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করেন। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকাল ৫টা পর্যন্ত নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন ও মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করেন। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ী ব্রিজে নিয়ে গিয়ে তাদের হত্যা করেন। এ সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করেন।

সর্বশেষ খবর