রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ইসির নিবন্ধনে রাজনৈতিক দলের সাড়া মিলছে না

গোলাম রাব্বানী

ইসির নিবন্ধনে রাজনৈতিক দলের সাড়া মিলছে না

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনে রাজনৈতিক দলের সাড়া মিলছে না। নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করার এক মাসের বেশি সময় পার হলেও কোনো দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি। গত ২৬ মে ইসি নতুন দলের নিবন্ধন আহ্বান সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ইসিতে দল নিবন্ধনের আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী বছর মে মাসের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত কাজ শেষ করতে চায় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য বেশ আগ্রহী ছিল দলগুলো। এবারে এখনো কোনো দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি। তবে ঈদের পর হয়তো দলগুলো আবেদন করতে পারে। নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট ইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কমিশন। ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন দল নিবন্ধনে ইসি সময় দিয়েছিল। তখন ৭৬টি দল ইসির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও কোনো দলকেই নিবন্ধন দেয়নি ইসি। যদিও পরবর্তীতে আদালতের  আদেশে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম (সিংহ) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন।

ইসি সূত্র জানায়, এখনো পর্যন্ত কোনো দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন না করলেও অনেকেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কমিশন থেকেও তাদের সঠিকভাবে ফরম পূরণসহ ইসির দেওয়া শর্তাদি পূরণ করে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগামী বছর মে মাসের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত কাজ শেষ করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন দল নিবন্ধীকরণে আগ্রহী রাজনৈতিক দলকে স্বীয় লেটারহেড প্যাডে দরখাস্ত করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে যা জমা দিতে হবে- (ক) দলের গঠনতন্ত্র; (খ) দলের নির্বাচনী ইশতেহার, যদি থাকে; (গ) দলের বিধিমালা, যদি থাকে; (ঘ) দলের লোগো এবং পতাকার ছবি; (ঙ) দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সব সদস্যের পদবিসহ নামের তালিকা; (চ) দলের নামে রক্ষিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং উক্ত অ্যাকাউন্টের সর্বশেষ স্থিতি; (ছ) দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ; (জ) দলের নিবন্ধনের দরখাস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত ক্ষমতাপত্র; (ঝ) নিবন্ধন ফি বাবদ সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবরে জমাকৃত অফেরতযোগ্য টাকার ট্রেজারি চালানের কপি (ট্রেজারিতে টাকা জমাদানের কোড নম্বর-১০৬০১০১১০০১২৫-১১০০০০০০০-১১০০১০০০-১৪২২২০৪); (ঞ) দরখাস্ত দাখিলের দিন পর্যন্ত- (অ) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হতে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যে কোনো একটিতে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসন লাভের সমর্থনে প্রামাণিক দলিল; অথবা (আ) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হতে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যে কোনো একটিতে দরখাস্তকারী দল কর্তৃক নির্বাচনে অংশগ্রহণকৃত নির্বাচনী এলাকায় প্রদত্ত মোট ভোট সংখ্যার শতকরা ৫ ভাগ ভোট লাভের সমর্থনে কমিশন বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র; অথবা (ই) দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ, উহা যে নামেই অভিহিত হোন না কেন, একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর অন্যূন ১-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দফতর এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা, ক্ষেত্রমতে, মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর দফতর এবং প্রতি উপজেলায় বা, ক্ষেত্রমতে, থানায় অন্যূন ২০০ ভোটার সদস্য হিসেবে দলের তালিকাভুক্ত থাকার সমর্থনে প্রামাণিক দলিল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ওই দলের অনুকূলে কমিশন ফরম-৩ এ একটি নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান করবে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।

সর্বশেষ খবর