শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
ঢাকা চট্টগ্রামে করুণ হাল খালের

দখল-ভরাটে বিপর্যস্ত বাড়ছে জলাবদ্ধতা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ খাল ভরাট-দখল। এই মত অনুসন্ধান কমিটির। বর্তমানে মেগা প্রকল্পের অধীনে নগরের ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টির সংস্কার কাজ চলছে। ২১টি দখল-ভরাটে বিপর্যস্ত। ৩০ ফুট প্রস্থের খাল এখন ৮-১০ ফুট। অনেক খাল এখন পরিণত হয়েছে নালায়। খাল দখল করে স্থাপনা করেছে স্বয়ং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।                   

জানা যায়, অতীতে চট্টগ্রাম নগরে খাল ছিল ৭১টি। চসিকের তালিকায় আছে ৫৭টি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অধীনে সংস্কার-উন্নয়ন করছে ৩৬টি। চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে নগরের খাল ৩৬টি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে খাল আছে ৫৬টি। সিডিএ ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের অধীনে নগরের ৩৬টি খাল সংস্কার-উন্নয়ন করছে। বাকি ২১টি খাল এখন দখল ভরাটে বেহাল, বিপর্যস্ত। চসিক ২১টি খালের উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগের কথা হলেও এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। খালগুলো এখন অভিভাবকহীন। অভিযোগ আছে, খালগুলো চসিক নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু এখন মেগা প্রকল্পের অধীন ৩৬টি সংস্কার করা হলেও বাইরের খালগুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। এ বছর বর্ষার আগে তিন দফা এবং বর্ষার শুরুতে টানা তিন-চারদিন পানির নিচে তলিয়ে যায় নগর। খাল নিয়মিত পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা প্রকট হচ্ছে। চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, চসিকের তালিকায় নগরে ৫৭টি খাল আছে। এর মধ্যে মেগা প্রকল্পের অধীনে ৩৬টির সংস্কার-উন্নয়ন কাজ চলছে। বাকি ২১টি খাল নিয়ে চসিকের পরিকল্পনা ছিল। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখন আপাতত এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। খালগুলো দিয়ে যাতে পানি প্রবাহিত হতে, তার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার-সংস্কার করা হয়ে থাকে। ২১ খাল উদ্ধার না হলে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের শতভাগ সুফল মিলবে না। জানা যায়, চসিকের ৫৭ খালের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত খাল ১৩টি, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ৩৩টি ও হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ১০টি। তবে অতীতে চট্টগ্রাম নগরে ছোট-বড় মিলে ১৮২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১১৮টি খাল থাকার রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত অর্ধশত খাল অস্তিত্বহীন। চট্টগ্রাম নগর থেকে পানি সরাসরি প্রবাহিত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে মূলত ১০টি খাল দিয়ে। এগুলো হলো চাক্তাই খাল, রাজা খাল, বিবি  মরিয়ম খাল, কলাবাগিচা খাল, ফিরিঙ্গি বাজার খাল, বাকলিয়া খাল, মহেশ খাল, বোট ক্লাব খাল ও ডোমখালি খাল দিয়ে। এসব খালের বেশির ভাগ স্থান দখল-ভরাটের কবলে। মেগা প্রকল্পের অধীনে খাল উদ্ধার ও সংস্কার কাজ এখন চলমান। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১ টির মধ্যে অনেক খাল এখন ভরাট ও খাল দখল করে স্থাপনা তৈরি হয়ে গেছে। ৩০ ফুট প্রস্থের অনেক খাল এখন ৬ ফুটে ঠেকেছে। বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারের পাশের খালটি দখল করে চসিক বহুতল ভবন করেছে। কালারপুল এলাকার খালটিরও বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে গেছে। অভিন্ন চিত্র চাক্তাই খাল ও রাজা খালের।

সর্বশেষ খবর