শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
স্বর্ণ ডাকাতির অভিযোগ

এএসআই জাহিদের চার সহযোগী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গাবতলীতে সোনা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত পুলিশের এএসআই জাহিদুল ইসলামের চারজন সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। তারা হলেন- মো. সোহেল আহম্মেদ পল্লব, মো. পলাশ শেখ, মো. মাসুদ রানা ও রবিন হাওলাদার পরেশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ২০ ভরি সোনার গয়না ও সোনা বিক্রির ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর সদরঘাট ও মেরাদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে, রবিবার সকালে রাজধানীর তাঁতীবাজারের ধানসিঁড়ি চেইন এবং বল হাউস থেকে ৩৮ ভরি ১৪ আনা সোনার গয়না নিয়ে টিটু প্রধানীয়া টাঙ্গাইল যাচ্ছিলেন। পথে গাবতলী বাসটার্মিনালে ডিবি পুলিশ পরিচয়ধারী ডাকাতদের কবলে পড়ে সোনা খোয়ান। এ ঘটনায় দারুস সালাম থানায় তিনি মামলা করেন। ওই মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের রূপনগর থানায় এএসআই জাহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে এ বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এএসআই জাহিদুলের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ডাকাতিতে জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী টিটু প্রধানীয়া রাজধানীর কোতোয়ালি থানার তাঁতীবাজারের ধানসিঁড়ি চেইন অ্যান্ড বল হাউস নামক সোনার দোকানের একজন কর্মচারী।

 তিনি সোনার দোকানে তৈরি করা গয়না নিয়ে বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে ডেলিভারি দেন। ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৬টার দিকে টিটু প্রধানীয়া সোনার গয়না নিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সখিপুর এলাকার বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোটরসাইকেলযোগে রওনা হন। গাবতলী বাসটার্মিনালে পৌঁছে টাঙ্গাইলের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তার কাছে এসে নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার নাম-ঠিকানা ও পেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। ভুক্তভোগী নাম-ঠিকানা বলার পর ব্যাগের মধ্যে কী আছে জানতে চায়।

ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়ার কারণে ভুক্তভোগী টিটু ব্যাগে ৩৮ ভরি ১৪ আনা সোনার তৈরি বল চেইন, চেইন, ঝুমকা, বল ঝুমকা, লকেট, আংটি ও রিসলেট আছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর আরও চার-পাঁচজন লোক এসে যোগ দেয় দলে। তারা টিটুর কাছ থাকা সোনার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের একটি মোটরসাইকেলে (ঢাকা মেট্রো-ল ৫৬-৬৪৩৮) বসিয়ে গাবতলী বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে বিজয় সরণি মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে রেখে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা তার জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় বলে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় রূপনগর থানার এএসআই জাহিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, যদি ডাকাতিতে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত থাকেন, তাহলে তার শাস্তি তিান পাবেন। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, এএসআই জাহিদের সোর্স ছিল গ্রেফতার পলাশ। সেই টিটু প্রধানীয়ার কাছে সোনা থাকার বিষয় জাহিদকে অবহিত করে। সোনার ব্যাগটি লুট করে পল্লব তার কাছে রাখে। পরে কিছু সোনা বিক্রি করে পলাশ ও পল্লব ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে ৫ লাখ টাকা নেয় এবং মাসুদ নেন ৫০ হাজার টাকা। সোর্স পলাশ মিরপুরে থাকলেও রবিন কেরানীগঞ্জ এলাকায় থাকত। ডিবির মিরপুর বিভাগের এডিসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গতকাল আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তিন দিনের রিমাঞ্জ মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ খবর