মানুষ বন্ধক রেখে ইয়াবা বিক্রির পদ্ধতি চালু করেছে মাদক মাফিয়ারা। তারা ইয়াবার ব্যবসা চাঙা এবং সহজ করতে নতুন এ বিক্রি পদ্ধতি চালু করেছে। মাদকের অন্ধকার জগতে দিন দিন তা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া কয়েকজন মাদক ক্যারিয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পেয়েছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘একসময় টাকা দিয়ে ইয়াবা কিনতে হতো ইয়াবা ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে কিছু কিছু মাদক মাফিয়া বাকিতেই ইয়াবা বিক্রি করে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে জামানত হিসেবে রাখতে হয় মাদক মাফিয়াদের হাতে। চালান নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছালে তখন ইয়াবা বিক্রির টাকা পৌঁছে দেওয়া হয় মাদক মাফিয়াদের হাতে।’ জানা যায়, কক্সবাজারের মাদক মাফিয়ারা ইয়াবা বিক্রি আরও সহজ এবং চাঙা করতে ‘বন্ধক’ পদ্ধতি চালু করেছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে অগ্রিম কিংবা নগদে ইয়াবা কিনতে হয় না। কক্সবাজার থেকে নেওয়া চালান গন্তব্যে পৌঁছালে পরিশোধ করতে হয় টাকা।
ইয়াবার ব্যবসার বন্ধক হিসেবে কাজ করা এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনের। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইয়াবার ক্যারিয়ার হওয়ার চেয়ে বন্ধক হিসেবে কাজ করা অনেক সহজ। গ্রেফতার হওয়ার চান্স থাকে না, আবার টাকাও বেশি। তাই ইয়াবা ক্যারিয়ারদের অনেকে বন্ধক হিসেবে কাজ করছে। বন্ধক হিসেবে থাকলে একেক চালানে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে সমস্যা হচ্ছে গন্তব্যে চালান পৌঁছার পর যদি টাকা ফেরত দেওয়া না হয় তাহলে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয় বন্ধককে।’ ইয়াবার বিক্রির নতুন এ পদ্ধতি সম্পর্কে অপরাধ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ইয়াবা আগ্রাসন আরও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দিতেই মাদক মাফিয়ারা এ পদ্ধতি চালু করেছে। এতে মাদকের আগ্রাসন আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করবে। তিনি পরামর্শ দেন, ইয়াবার এ আগ্রাসন ঠেকাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ইয়াবার রুটগুলো সিল করতে।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সোমেন মণ্ডল বলেন, ‘মূলত পরিচিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরাই বন্ধক পদ্ধতি অনুসরণ করে। বর্তমানে অনেকে তা অনুসরণ করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
