বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
বেহাল স্বাস্থ্য খাত

কখনই নিবন্ধন করেনি ১৪ শতাংশ হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে অনিবন্ধিত হাসপাতালের সংখ্যা নিয়ে উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) বলছে, দেশে এমন কিছুসংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে যারা নিবন্ধনের জন্য কখনই আবেদন করেনি। শতকরা হিসেবে এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এমনকি যারা কোনো একসময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, তাদের মধ্যেও বড় একটি সংখ্যার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গতকাল আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণা উপাত্ত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) সিনিয়র ডিরেক্টর ডা. শামস এল আরেফিন। ২০১৯-২০ সালে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। তবে ২০২২ সালে এসে সেই পরিস্থিতি পরিবর্তন হতেও পারে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি। ডা. শামস এল আরেফিন বলেন, ‘দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ বিষয়টি দেখতে ইউএসএইডের সহায়তায় আমরা ১২ সিটি করপোরেশন, ১০ জেলার ২৯ উপজেলায় একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করি। এতে স্থানীয় সিভিল সার্জনসহ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল সহায়তা করে।’ তিনি বলেন, ‘গবেষণাটি করতে গিয়ে ১ হাজার ১৮৯টি বেসরকারি হাসপাতালকে অ্যাসেসমেন্টের (মূল্যায়ন) জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়, কিন্তু          তাদের মধ্যে ৪০টি হাসপাতাল সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সবশেষে ১ হাজার ১১৭টিতে অ্যাসেসমেন্ট  করা হয়।’

শামস এল আরেফিন বলেন, ‘জরিপকৃত ১ হাজার ১১৭টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৯৫৬টি কোনো একসময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, শতকরা হিসাবে যা প্রায় ৮৬ শতাংশ। আর বাকি ১৬১টি বেসরকারি হাসপাতাল কখনই নিবন্ধন করেনি, যা ১৪ শতাংশ।’ তিনি বলেন, ‘কোনো একসময় নিবন্ধনের আওতায় আসা ৯৫৬টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৮৮৬টির (৭৯ শতাংশ) লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, ৬৬টি হাসপাতালের (৬ শতাংশ) বৈধ লাইসেন্স ছিল এবং বাকি ৪টি হাসপাতাল (দশমিক ৫ শতাংশ) এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি।’ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০ সালে দেশে বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি শুরু হয়। অগ্রগতিটা সবচেয়ে বেশি হয় ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার জন্য নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতালের ওপর। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের এ নির্ভরশীলতার কারণ হলো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা সংকট। আরও বলা হয়, ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার সাতটি শর্ত/নিয়ম মানতে হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব শর্ত পূরণ করে স্বাস্থ্যসেবা দিতে গেলে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়, যে কারণে গুণগত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে সমস্যা হয়।

 

সর্বশেষ খবর