শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বনানী লেকের পাশে ওয়াকওয়ে

জরুরি মনে করেন স্থানীয়রা, সহজ হবে যাতায়াত, কমবে ভোগান্তি

হাসান ইমন

বনানী লেকের পাশে ওয়াকওয়ে

রাজধানীর বনানী লেক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানী। এখানে হাতিরঝিলের মতো সুন্দর লেক গড়ে তুলেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই লেকের এক পাশে কড়াইল বস্তি অন্য পাশে গুলশান এলাকা। অথচ এই লেকের পাশে কোনো ওয়াকওয়ে নেই। এই লেকের পাড়ে ওয়াকওয়ে থাকা জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয়রা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, লেকের দুই পাশে সড়ক হলে নিকেতন থেকে কালাচাঁদপুর পর্যন্ত মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। একই সঙ্গে ভোগান্তি কমবে মানুষের। আর লেকের দুই পাড়ে সড়ক হলে গুলশান-বনানী এলাকার যানজট অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করেন নগর বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কালাচাঁদপুর-বনানী-মহাখালী হয়ে নিকেতন পর্যন্ত লেকের দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্যবর্ধনে একটি প্রকল্প নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তবে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে এসব এলাকার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে।

তিনি আরও বলেন, লেকের দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ হলে মানুষের যাতায়াতের জন্য অনেক ভালো হবে। নিকেতন, মহাখালী, বনানী ও গুলশান এলাকার মানুষ হেঁটে যাতায়াত করতে পারবে। একই সঙ্গে হাতিরঝিলের মতো নৌ-রুট চালু করতে পারলে সড়কের ওপর গাড়ির চাপ অনেকটা কমে যাবে। কমবে এসব এলাকার যানজট। তবে লেক দখল করে কোনো অবকাঠামো যেন গড়ে না ওঠে সেদিকে কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে। গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, বনানী ব্রিজ থেকে লেকের ডান পাশ হয়ে কড়াইল বস্তির দিকে একটি সরু রাস্তা রয়েছে। ব্রিজ থেকে নামলে সড়কটির কিছু অংশ ইট বিছানো রয়েছে। এরপর থেকে কড়াইল বস্তি পর্যন্ত সড়কটির বেহাল অবস্থা। কোনো রকম মাটি ফেলে রাখা হয়েছে। উঁচু-নিচু থাকায় মানুষের হাঁটতেও সমস্যা হয়। সড়কটি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলের সুযোগ রয়েছে। পরিবহন চলাচল করতে পারে না। তবে এই সড়কটি কড়াইল বস্তি পর্যন্ত শেষ। এরপর লেকের পাড় ঘেঁষে মহাখালী গুদারাঘাট পর্যন্ত অনেক স্থাপনা রয়েছে। একই অবস্থা লেকের বাম পাশেও। দুই পাশে দখল করে গড়ে উঠেছে নানা স্থাপনা। এ বিষয়ে প্রতিবেদকের কথা হয় কড়াইল বস্তির বাসিন্দা ইসমাইল আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, এই বস্তিতে ১০ বছর ধরে বসবাস করছি। এখানে কোনো রাস্তা ছিল না। লেকের পাড়ে অনেক বাড়ি ছিল। ৩-৪ বছর আগে এই লেকটি খনন করা হয়। ওই সময় বাড়িগুলো উচ্ছেদ করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এতে কড়াইল বস্তির কিছু অংশের মানুষ যাতায়াত করতে পারে। তবে রাস্তাটি গুদারাঘাট পর্যন্ত হলে সবার উপকার হতো। মানুষ সহজে বনানী ও মহাখালী যেতে পারত।

লেক পাড়ের চা বিক্রেতা আবদুল লতিফ বলেন, বনানী লেকটি শুনেছি রাজউকের। ৩-৪ বছর আগে শুনেছিলাম এই লেকে স্পিড বোট চালু ও লেকের পাড়ে হাঁটার রাস্তা নির্মাণের কথা। তবে এখন পর্যন্ত কিছুই দেখিনি। লেকের পাড়ে রাস্তা হলে আমাদের যাতায়াতের জন্য অনেক ভালো হতো। দোকানের বেচা-বিক্রিও বেড়ে যেত। এ বিষয়ে রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, (বনানী-বারিধারা-মহাখালী) লেক সংস্কার, পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি, নৌ-যোগাযোগ, বিনোদন সুবিধার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একটি প্রকল্প নেয়। এরপর প্রকল্পটি একনেক থেকে কিছু সংশোধনী দিয়ে ফেরত পাঠায়।  এখন সংশোধন শেষে নতুন করে ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে লেকের সৌন্দর্যবর্ধনে আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি ওয়াকওয়ে-নৌ-রুট প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজউকের প্রকল্পে হাতিরঝিল লেকের সঙ্গে গুলশান চেয়ারম্যানবাড়ি লেক, গুলশান-বনানী কবরস্থান লেক ও গুলশান-বারিধারা লেকের অংশ যুক্ত করা হচ্ছে। এই রুটগুলোর যেসব স্থানে যান চলাচল নেই, সেগুলোকে যুক্ত করে ট্রাফিকের চাপ কমানো প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ ছাড়া লেকের চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে পথচারী চলাচলের সুযোগ তৈরি এবং লেকড্রাইভ সড়ক ও ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রকল্প দুটি সমন্বয় করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর