বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়া থেকে গম দুবাই সৌদির সার কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানি করবে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (২ হাজার ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) ব্যয়ে রাশিয়া থেকে জিটুজি পর্যায়ে এ ৫ লাখ টন গম আমদানি করা হবে। একই সঙ্গে ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি করা হবে। এ ছাড়া দুবাই ও সৌদি আরব থেকে ১ হাজার ২৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার টন এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) ও ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। এর জন্যও পৃথক দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত পৃথক তিনটি দরপ্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল বারিক প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অনলাইনে ব্রিফিং করেন। গতকাল সভায় মোট ১৫টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। অতিরিক্ত সচিব বলেন, টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাশিয়া থেকে জিটুজি পর্যায়ে ৫ লাখ টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। প্রতি কেজি গমের মূল্য ধরা হয়েছে ৪০.৮৫ টাকা। রাশিয়ার একটি কোম্পানিকে সুপারিশ করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কী ধরনের বৈদেশিক মুদ্রায় এসব পণ্যের আমদানিমূল্য পরিশোধ করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবে টাকার অঙ্ক দেওয়া হয়েছে। মিটিংয়ে অবশ্য কারেন্সি রিলেটেড কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে ডলারে কেনা হবে। সে হিসাবে ২১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে করা হয়েছে। প্রতি টন ৪৩০ মার্কিন ডলার।’

 

এদিকে ভারত থেকে জিটুজি পর্যায়ে ১ লাখ টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। ৭০ হাজার টন লটের চাল আসবে চট্টগ্রাম পোর্টের মাধ্যমে। এর ফলে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪২.১৩ টাকা। আর ৩০ হাজার টন লট আসবে ল্যান্ড পোর্টের মাধ্যমে। এতে ব্যয় হবে প্রতি কেজি ৪০.৭০ টাকা। আর গড়ে প্রতি টনের দাম পড়বে ৪৪৩.৫০ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে ২ লাখ টন থাই নন-বাসমতি চাল এবং ভারত থেকে ৩০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুটি মিলে একত্রে ২ লাখ ৩০ হাজার টন। নন-বাসমতি চাল প্রতি কেজি ক্রয়মূল্য ৪৯.৪৯৫ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬.৯৩ টাকা। সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ভারতের সেন্ট্রাল গভার্নমেন্ট কনজ্যুমার করপোরেশন সোসাইটি লিমিটেড দিল্লি, সেখান থেকে ক্রয় করা হবে। নন-বাসমতি প্রতি টন ৫২১ মার্কিন ডলার। ৩০ হাজার টন আতপ চাল প্রতি টন ৪৯৪ মার্কিন ডলার। মোট ১ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। সর্বমোট ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানিতে খরচ হবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলা টাকায় ১ হাজার ১৩০ কোটি ৬৯ টাকা।

আবদুল বারিক বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দুবাইভিত্তিক ফেকলো জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি নামক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ টন এমওপি সার সরাসরি ক্রয়চুক্তির মাধ্যমে ৯৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে সৌদি আরবের এসআইআইজি অ্যাগ্রি নিউট্রিশন কোম্পানি থেকে ষষ্ঠ লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার ১৭৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার ৭৫৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে এসআইআইজি অ্যাগ্রি নিউট্রিশন কোম্পানি থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার ১৭৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার ৭৫৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর