বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল

অফিস সূচি মানেন না ডাক্তাররা দুদকের অভিযানে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সরকার নির্ধারিত অফিস সময়সূচি মানেন না। বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা বিলম্বে অফিসে পৌঁছে একটা রাউন্ড দিয়েই কেটে পড়েন। হাসপাতালের পরিচালক ও মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও সরকার নির্ধারিত সময়ের ২/৩ ঘণ্টা পর অফিসে পৌঁছানোর অভিযোগ রয়েছে। মিড লেভেল ও জুনিয়র ডাক্তাররাও অফিস করেন খেয়াল-খুশি মতো। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক অভিযানে বিষয়টি ধরা পড়ে। সরকারের নতুন সূচি অনুযায়ী অফিস সময় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায় বরিশাল দুদকের একটি দল। সহকারী পরিচালক রাজ কুমারের নেতৃত্বে দুদক দলটি সকাল সোয়া ৯টার পরও বিভিন্ন আন্ত ও বর্হিবিভাগ ঘুরে বেশিরভাগ চিকিৎসককে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান। অভিযান চলাকালে সার্জারি বিভাগের প্রধান ও মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজিমুল হক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. মাসুম আহমেদ, নিউরো সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ার হোসেন বাবলু এবং পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামকে কর্মস্থলে পাননি তারা। বেশ কিছুক্ষণ তারা পরিচালক কার্যালয়ে অবস্থান করেন। এ সময় পরিচালককে মুঠোফোনে কল দেন তারা। পরিচালক ছুটিতে রয়েছেন বলে তাদের জানান। তবে পরিচালক ছুটি নিয়েছেন মর্মে কোনো প্রমাণপত্র পাননি দুদক কর্মকর্তারা। পরে তারা মেডিকেল কলেজে অভিযান চালান।

সেখানেও অনেক শিক্ষককে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান দুদক কর্মকর্তারা। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষের কাছে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফিঙ্গার বায়োমেট্রিক প্রিন্ট চান তারা। কিন্তু অধ্যক্ষ তাদের সেটা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও বাদানুবাদ হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ফিঙ্গার বায়োমেট্রিক প্রিন্ট না নিয়েই মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে মেডিকেলের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, দুদক কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে ফিঙ্গার বায়োমেট্রিকের প্রিন্ট কপি চেয়েছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় তাদের সেটা দেওয়া হয়নি। এ জন্য তারা সিনিয়র ডাক্তার এমনকি তার (অধ্যক্ষ) সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। এতে ডাক্তারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন অভিযান পরিচালনাকারী দুদক কর্মকর্তারা।

বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দেবব্রত ম-ল মৌখিকভাবে বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সকাল সোয়া ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মেডিকেল হাসপাতাল ও কলেজে অভিযান চালিয়েছে দুদক। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা সে ব্যাপারে তারা গণমাধ্যমে কিছু বলবেন না বলে জানান তিনি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর