রাজধানীর শাহআলী এলাকায় ২০১২ সালে চাঞ্চল্যকর বাসু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলকেসকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত শুক্রবার রাজধানীর পার্শ্ববর্তী সাভার থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪ এর একটি দল। র্যাব বলছে, ১০ বছর ধরে আলকেস ঠিকানা পরিবর্তন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে পেশাও পরিবর্তন করেছেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, আলকেসের বিরুদ্ধে বাসু হত্যা মামলা হওয়ার পর চার মাস হাজত খেটে জামিন নিয়ে এলাকায় অবৈধ বালুর ব্যবসা শুরু করেন। বাসু হত্যা মামলার আসামি আজাহার ও সানুর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় আলকেসের নেতৃত্বে সাভার থানা এলাকায় আজাহার ও সানুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। এ মামলায় সে সাভার থানার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং সংরক্ষণ করার অপরাধে পরিবেশ অধিদফতর তার বিরুদ্ধে শাহআলী থানায় মামলা রুজু করে এবং এই মামলায় সে পলাতক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এ ছাড়াও সে শাহআলী থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি। এসব মামলায় গ্রেফতার এড়ানোর জন্য সে লোকচক্ষুর আড়ালে নিজেকে আত্মগোপনে চলে যায়।
ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, বাসু হত্যা মামলাটি তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে এজাহারনামীয় ১৩ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত একজনসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বিচারকার্য পরিচালনা করে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর আলকেস, আজগর আলী, খলিল, সেলিম ও রাজুসহ মোট পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড, কদর আলী ও লেদুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। জামিনে থাকা অবস্থায় আলকেস গংয়ের সঙ্গে আজাহার ও সানুর মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় আজাহার ও সানু নির্মমভাবে খুন হন। এই ডাবল মার্ডারের মূল আসামি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলকেস। র্যাব-৪ এর সিও মোজাম্মেল বলেন, আলকেস শুরুর দিকে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি হত্যা ও ডাকাতি করত। পরবর্তীতে বরিশাল গিয়ে ট্রাকের হেলপার ও পরে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে। বেপরোয়াভাবে বাস চালানের সময় সিলেটে তার বাসের নিচে পড়ে একজন নির্মভাবে নিহত হয় এবং এ ঘটনায় সিলেটের ওসমানীনগর থানায় পরিবহন আইনে তার বিরুদ্ধে পুনরায় হত্যা মামলা হলে সে পালিয়ে কুয়াকাটায় মাছ ধরার ট্রলারে কাজ শুরু করে। মাছ ধরার পাশাপাশি সাগরে বিভিন্ন ট্রলারে ডাকাতি করত বলে স্বীকার করেছে। প্রকৃতপক্ষে সে একজন অভ্যাসগত কুখ্যাত অপরাধী। গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত আলকেস দেড় বছর ধরে একটি দূরপাল্লার পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করে আসছিল।
জানা গেছে, আলকেসের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা আদালতে বিচারাধীন ও তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট পেন্ডিং আছে।